ইতিহাসের ভয়াবহতম দাবানলে পুড়ছে আমাজন বনাঞ্চল। গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রথম সাত মাসে, বিশ্বের বৃহত্তম রেইনফরেস্টের ৮৩ শতাংশ বেশি এলাকা গ্রাস করেছে আগুন। অপর্যাপ্ত বৃষ্টি একটি কারণ হলেও, এই বিপর্যয়ের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেয়ার বোলসোনারোর বাণিজ্যবান্ধব নীতিকেই দায়ী করছে পরিবেশবিদরা। যদিও বিশ্ব সম্প্রদায়ের তুমুল সমালোচনার মুখে বেসরকারি সাহায্য সংস্থাগুলোর দিকে অভিযোগের তীর প্রেসিডেন্টের।
লাতিন আমেরিকায় অবস্থিত আমাজনের বেশিরভাগই পড়েছে ৮৫ লাখ বর্গকিলোমিটারের দেশ- ব্রাজিলে। সম্প্রতি দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থার ছবিতে দেখা গেছে, ৭৩ হাজার পৃথক দাবানলে পুড়ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিরহরিৎ বন। হুমকিতে আছে ৩শ’ পৃথক সম্প্রদায়ের আট লাখ আদিবাসীর অস্তিত্ব।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেয়ার বোলসোনারো বলেন, আমাজনে এনজিওগুলো এ আগুন লাগিয়েছে। কারণ তারা টাকা চায়। ওদের অর্থবরাদ্দ কমিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সরকারকে বিব্রত করতে ইচ্ছে করে এমন সমস্যা তৈরি করছে সংগঠনগুলো। তবে দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি বোলসোনারো।
পরিসংখ্যান বলছে, তার মেয়াদে গেল এক বছরে দুর্গম আমাজনে সশস্ত্র ভূমিদস্যুদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে দেড়শ’ শতাংশ। ক্ষমতা গ্রহণের পরই বাণিজ্যিক কারণে সংরক্ষিত বনাঞ্চল কমানোর ঘোষণা দেন কট্টর ডানপন্থি এই প্রেসিডেন্ট।
গ্রিন ইনিশিয়েটিভের গবেষক ওজভালদো স্টেলা বলেন, বোলসোনারো মূল বিষয় থেকে নজর সরানোর চেষ্টা করছেন। বন উজাড় বন্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে দোষারোপের খেলায় মেতেছেন। এখন বন সংরক্ষণে কঠোর আইন প্রণয়ন আর বনজ সম্পদ ধ্বংস না করে বিকল্প অর্থনৈতিক উৎস খোঁজার কথা তার। উল্টো বনধ্বংসকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
পৃথিবীকে রক্ষায় ‘হার্ট অব আর্থ’ খ্যাত অ্যামাজনে চলমান বিপর্যয় ঠেকাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশবাদী গোষ্ঠীগুলো।
Leave a reply