এক জার্মান ট্রাক চালকের মৃত্যুর পর পরিবার খেয়াল করলো তিনি তাদের জন্য অনেকগুলো বস্তা রেখে গেছেন। বস্তাগুলো খুলে দেখা গেল, সব খুচরা পয়সা! আর ৬ মাস ধরে সে মুদ্রা গুনে শেষ করলেন এক ব্যাংকার!
জীবিকার তাগিদে এদিকে-সেদিক ঘুরে বেড়াতে হতো সেই জার্মান ট্রাক চালককে। কয়েক দশক ধরে তিনি বাহির থেকে ঘরে ফিরে খুচরা পয়সা জমিয়ে রাখা শুরু করলেন। ২০১৭ সালের মে মাসে ট্রাক চালক ভদ্রলোক মারা যান। মৃত্যুর সময় সঞ্চিত এসব মুদ্রা পরিবারকে উইল করে দিয়ে যান। এতগুলো খুচরা পয়সা নিয়ে পরিবারটি যেন কিছুটা দিশেহারা অবস্থায় পড়লো। এতদিন ধরে জমানো এতগুলো মুদ্রা গুনবে কে?
অবশেষে, শলাপরামর্শ করে পরিবারের সদস্যরা দশাসই সাইজের ভ্যানে করে মুদ্রাগুলো নিয়ে যান ব্যাংকে।
এগিয়ে এলেন এক পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান ব্যাংকার। ২০১৭ সালের অর্ধেকটা সময়ই তিনি ব্যয় করেছেন ২.৫ মেট্রিক টন ওজনের এই মুদ্রাগুলো গুনে শেষ করতে!
২০ বছর ধরে এতগুলো খুচরা পয়সা জমিয়েছিলেন সেই ড্রাইভার। ১০০টি বড়সড় বস্তায় পয়সাগুলো জমিয়ে রেখেছিলেন। কয়েনগুলো ছিল ডয়েচ মার্ক, ২০০২ সালে ইউরো চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত জার্মানির ভাংতি পয়সা হিসেবে এর প্রচলন ছিল।
কয়েনগুলোর একটা বড় অংশে মরিচা ধরেছিল। পাশাপাশি দীর্ঘদিন বস্তাবন্দী থাকার কারণে একটির সাথে আরকটি আটকে গিয়েছিল। জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওল্ডেনবার্গ শাখার কর্মী উল্ফগ্যাং ক্যামেরিটকে দায়িত্ব দেয়া হয় তার নিয়মিত কাজের পাশাপাশি এই মুদ্রাগুলো গোনার। পরিশ্রমী উল্ফব্যাগ নিষ্ঠার সাথে কর্ম সম্পাদন করেন। প্রতিদিন একঘণ্টা সময় নিয়ে তিনি মুদ্রাগুলো গণনা করতেন।
উল্ফব্যাগ জানান, আমি প্রতিটা মুদ্রা নিজ হাতে গণনা করেছি। এ ধরনের কাজ করতে আমি পছন্দ করি। তাই কাজটা আমার জন্য অসুবিধার ছিল না।
গণনা শেষে কয়েনগুলোর মূল্যমান দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ইউরো। মৃত ব্যক্তিটির পরিবারের জন্য যা ছিল অপ্রত্যাশিত প্রাপ্তি।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply