সুন্দরবনের দস্যুদের আত্মসমর্পণে ভূমিকা রাখায় যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মোহসীন উল হাকিমকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার এক বছর পূর্তিতে
আজ বাগেরহাটের শেখ হেলালউদ্দিন স্টেডিয়ামে সাবেক দস্যুবাহিনীর সদস্যের নিয়ে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে এই সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মোহসীন-উল হাকিমকে ক্রেস্ট তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
দীর্ঘযাত্রায় মধ্যস্থতা করতে গিয়ে মোহসীন-উল হাকিমকে মোকাবেলা করতে হয়েছে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটি ছিলো দুই পক্ষের আস্থা অর্জন করা। বিশেষ করে দস্যুদের আস্থায় আনা এবং পাশাপাশি সরকারের পক্ষ অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও আস্থা অর্জন করতে হয়েছে। এজন্য সময় লেগেছে ৬ বছর।
২০১৬ সালের ৩১ মে। টান টান উত্তেজনা সুন্দরবনের পশুর নদে। দীর্ঘ যাত্রায় প্রথম সফলতা। যেখানে বলা হতো, সুন্দরবনে ভয়ঙ্কর এই দস্যুদের ভয়ে “বাঘে-হরিণে এক ঘাটে পানি খায়”। সেই দস্যুরা নিজ হাত জমা দিলেন ৫২টি অস্ত্র। শপথ নিলেন ভাল হয়ে যাওয়ার। প্রথম পর্যায়ে ওইদিন আত্মসমর্পণ করেন সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় ও ভয়ংকর দস্যুদল মাস্টার বাহিনী।
এরপর পর্যায়ক্রমে মজনু বাহিনী, ইলিয়াস বাহিনী, আলম বাহিনী, শান্ত বাহিনী, মানজার বাহিনী, মজিদ বাহিনী, বড় ভাই বাহিনী, ভাই-ভাই বাহিনী, সুমন বাহিনী, আলীপ বাহিনী, জাহাঙ্গীর বাহিনী,দাদা ভাই বাহিনী, হান্নান বাহিনী, আমির বাহিনী, মুন্না বাহিনী, ছোট শামছু বাহিনী, মানজু বাহিনী, বাহিনীসহ ২৬টি বাহিনীর সদস্যরা আত্মসমর্পণ করে।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর বাগেরহাট স্টেডিয়ামে সত্তার বাহিনী, শরিফ বাহিনী, সিদ্দিক বাহিনী, আল-আমিন বাহিনী, আনারুল বাহিনী ও তৈয়ব বাহিনীর বনদস্যুরা আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণকৃত ৩২টি বাহিনী প্রধানসহ সর্বমোট ৩২৮ বনদস্যু সদস্য আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। তারা র্যাবের হাতে তুলে দেয় ৪৬২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৩ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদ। এই দিনেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত’র ঘোষণা দেন।
Leave a reply