কিশোর ম্যাগাজিন ‘কিশোর আলো’ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হয়েছে নাইমুল আবরার নামের এক শিক্ষার্থী। নিহত আবরার ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ক্লাস নাইনের শিক্ষার্থী। শুক্রবার রাত নয়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এঘটনায় আয়োজক কমিটির সমালোচনা করেছেন অনেকেই।
এরই মধ্যে গতকাল রাত দেড়টার দিকে এবিষয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হক। যেখানে তিনি এ দুর্ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আনিসুল হক লিখেছেন-
‘নাইমুল আবরারের আব্বা-আম্মা এবং শোকার্ত পরিবারের সঙ্গে এতক্ষণ হাসপাতালে ছিলাম। এই মাত্র ফিরলাম। হাসপাতালে শোকার্ত পরিবারের সামনে বসে আমি স্টাটাস লেখার মতো অবস্থায় ছিলাম না। যা লিখেছি, তাতে বারবার ভুল হচ্ছিল, বানান ভুলও ছিল।
কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে এসে আববার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে এবং হাসপাতালে নেবার পর ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন, আমার জন্যে এর চেয়ে শোক, দুঃখ, পরিতাপের বিষয় আর নেই। নাইমুল আববার ঢাকা রেসিডেনসিয়ালের ক্লাস নাইনের ছাত্র ছিল। ভালো ছাত্র ছিল। ট্যালেন্ট পুলে বৃত্তি পেয়েছিল।
তারা দুই ভাই। বড়ভাই প্রকৌশলী, জার্মানিতে থাকেন। নাইমুল আবরারের আব্বা আগে সৌদি আরবে থাকতেন।
এখন ফেসবুকে কতগুলো প্রচারণা দেখছি। আমি আমার জানা দেখা কথাগুলো বলি। আমাকে চারটার পর জানানো হয়, একজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। আরো খানিক পরে জানানো হয়, আহত ভদ্রলোক সম্ভবত চট্টগ্রাম থেকে আসা। অনুষ্ঠান শেষ হয় ৪টা ৪০ কি ৪টা ৪৫। পাঁচটার পর আমি জানতে পারি, আহত জন মারা গেছেন। মানে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার ১৫/২০ মিনিট পরে মৃত্যুর খবর আমি পাই। তারও আধ ঘণ্টা পর আমাকে জানানো হয়, যিনি মারা গেছেন, তিনি রেসিডেনসিয়ালের ক্লাস নাইনের ছাত্র।
কাজেই যারা বলছেন, নাইমুল আবরার মারা যাওয়ার খবর গোপন করে অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া হয়েছে, তারা ঠিক বলছেন না। শেষ শিল্পী অর্ণব ওঠার আগে দুর্ঘটনা সম্ভবত ঘটেনি। সম্ভবত বলছি, কারণ একেকজন একেকটা কথা বলছেন।
দ্বিতীয়ত, ইউনিভার্সাল হাসপাতাল আমাদের স্পন্সর নয়। তারা আমাদেরকে জরুরি মেডিকাল সার্ভিস দেবার জন্য ওখানে ছিলেন। দুজন এফসিপিএস ডাক্তার ছিলেন। একটা অ্যাম্বুলেন্স রেডি করা ছিল। সেই অ্যাম্বুলেন্সেই নাইমুল আববারকে হাসপাতালে নেয়া হয়। কেন তাকে হৃদরোগ ইন্সিটিউটে নেয়া হলো না, এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য আমার জানা নেই।
তবে আমরা যে মেডিকাল ক্যাম্প, টিম, অ্যাম্বুলেন্স রেডি রেখেছিলাম, সেটা ভালোর জন্য। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তা থাকা সত্ত্বেও নাইমুল আববার আমাদের ছেড়ে চলে গেল।
আমরা স্তব্ধ, বিধ্বস্ত। শোকাকূল।
Leave a reply