বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক কোম্পানি সৌদি আরামকো’র আইপিও ঘোষণা

|

বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক কোম্পানি সৌদি আরামকোর আইপিও (ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং) বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের কাছ থেকে বহু কাঙ্খিত এই ঘোষণা এসেছে রোববার।

এর আগে শুক্রবার যুবরাজ সালমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।

ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে আইপিও অনুমোদন ছয় মাস পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। মোট ২ ট্রিলিয়ন ডলার (২ হাজার কোটি ডলার) মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে আইপিও। তবে প্রথমে ১৬০০ থেকে ১৮০০ কোটি ডলার মার্কেট থেকে উঠাতে চায় সৌদি কর্তৃপক্ষ।

আরামকো বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠান। গত বছর এটির নিট লভ্যাংশ ছিল ১১১ বিলিয়ন ডলার, যা গুগল, অ্যাপল এবং এক্সন মবিলের সম্মিলিত লভ্যাংশের সমান।

আরামকো’র ২ হাজার কোটি ডলারের যে মূল্যা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অ্যাপল’র মূল্যের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি।

সৌদি আরামকোর আংশিক বেসরকারীকরণ ও আইপিও ছাড়ার বিষয়টি দেশটির তেল শিল্পে বড় একটি পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। ১৯৭০-এর দশকে কোম্পানিটি জাতীয়করণ করা হয়েছিল। বিশ্বের ১০ শতাংশ তেল উত্তোলন ও বিক্রির মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক কোম্পানি হিসেবে দাঁড়িয়েছে আরামকো। সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার মেরুদণ্ড হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে কোম্পানিটি।

২০১৬ সালে প্রথম আইপিও ছাড়ার ইঙ্গিত দেন যুবরাজ সালমান। তারপর বেশ কয়েকবার কাছাকাছি গিয়েও স্থগিত করা হয়। কোম্পানিটির ভ্যালুয়েশন ২ ট্রিলিয়ন ডলার করায় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হন।

কয়েকটি সূত্রের বরাতে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সৌদি আরামকোর ১ দশমিক ৫০ ট্রিলিয়ন ডলার ভ্যালুয়েশন হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী চীনসহ এশীয় ও উপসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন সরকারের সঙ্গে আরামকোর কর্তাব্যক্তিরা যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে। তিনটি সূত্র বলছে, চলতি সপ্তাহে নিউইয়র্ক ও লন্ডনে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আরামকোর সিইও আমিন নাসের।

সৌদি অর্থনীতিকে ঢেলে সাজাতে ও তেল রফতানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে যুবরাজ সালমানের গৃহীত রূপকল্প ২০৩০ বাস্তবায়নে সৌদি আরামকোর আইপিও ছাড়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইপিও থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ ওপেকভুক্ত দেশটির সার্বভৌম অর্থ তহবিল শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।

আরামকোর এ আইপিও ছাড়ার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে তীব্র লড়াইয়ে আছে বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রায় ২০টিরও বেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে এবং শীর্ষ দায়িত্বের জন্য বিবেচিত কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে সিটিগ্রুপ, গোল্ডম্যান স্যাকস গ্রুপ ও জেপি মরগান চেজ।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply