২ বছর পর বরফ গলছে, উষ্ণতার পথে সৌদি-কাতার সম্পর্ক

|

সৌদি আরব ও তার মিত্রদের কঠোর অবরোধের মধ্যে দুই বছর পার করার পর অনমনীয় কাতারের সাথে সম্পর্ক গড়েপিটে নিতে উদ্যোগ নিয়েছে রিয়াদ। আর এর মাধ্যমে উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যকার পারস্পরিক উত্তেজনার অবসান ঘটতে চলেছে। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ঘটনা এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

কাতার-সৌদি দ্বন্দ্ব ইস্যুতে সবচেয়ে বড় খবরটি আসে চলতি সপ্তাহে। গত ১৩ নভেম্বর সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন আকষ্মিকভাবে ঘোষণা দেয় তাদের ফুটবল টিম আসন্ন ‘গালফ কাপ’ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিতে কাতারে যাবে! অথচ গত দুই বছর ধরে দেশ তিনটি কাতারের সাথে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে রেখেছে। এমনকি কাতারে যাতায়াতকারী কোনো বিমানকে নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতিও দেয়নি।

বেশ কিছুদিন ধরে কাতার-সৌদি সম্পর্ক ঠিক করে নেয়ার কিছু পর্দার আড়ালের উদ্যোগের খবর পাওয়া যাচ্ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ১৩ নভেম্বরের ঘোষণা একটি স্পষ্ট বার্তা দিল।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ কয়েকদিন আগে জানিয়েছিল, কাতারের পক্ষ থেকে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নিতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে সৌদি আরবের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এদিকে কুয়েতি পত্রিকা আল কাবাস জানিয়েছে, কুয়েতের আমির সৌদি বাদশাহর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন দোহার সাথে মিটমাট করে নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে।

আর সর্বশেষ এএফপি জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কাতারের একটি প্রতিনিধি দল সৌদি আরব সফরে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

সব মিলিয়ে এটা স্পষ্ট যে, রিয়াদ এবং দোহা উভয়েই নিজেদের মধ্যে সমস্যা নিরসনে উদ্যোগী হয়েছেন। সাথে সৌদি আরবের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে আমিরাত এবং বাহরাইন।

মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক আরেক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই-এ আন্দ্রেস ক্রেইগ লিখেছেন, মূলত ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন গৃহীত বিভিন্ন নীতিতে আস্থা রাখতে না পেরে নিজেদের প্রতিবেশীর সাথে মিটমাট করে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি ও আমিরাত। কাতারের ওপর অবরোধ আরোপের পর রিয়াদ ও আবুধাবির ধারণা ছিল দোহাকে তাদের শর্ত মেনে চলতে বাধ্য করতে ওয়াশিংটন। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বরং ওয়াশিংটন ও ইউরোপের রাজধানীগুলোতে কাতার নিজের প্রভাব অক্ষুণ্ন রেখে চলতে পেরেছে। এবং আঞ্চলিক অন্যান্য শক্তির সহায়তায় দেশটি অর্থনৈতিকভাবে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠেছে। ফলে সৌদি ও তার মিত্রদের অবরোধ কোনোই কাজে আসেনি। এমন নিরর্থক অবরোধ আর দীর্ঘায়িত করার পক্ষে নয় রিয়াদ।

অন্যদিকে কাতারও প্রথম থেকেই চেয়ে আসছিল অবরোধ প্রত্যাহারে যৌক্তিক সব ধরনের সহায়তা দিতে চায় তারা। সব মিলিয়ে উপসাগরীয় অঞ্চলে রাজনীতি ও কূটনীতির নতুন হিসাব নিকাশ জমে উঠেছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply