হত্যার রাজনীতি অস্থিরতা বাড়াচ্ছে পাহাড়ে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হাতে খুন হয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষ। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, দুই দশকে শান্তি চুক্তির বেশিরভাগ ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে। কিন্তু আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলো পুরোপুরি অস্ত্র সমর্পণ না করায়, তৈরি হয়েছে সংঘাতময় পরিস্থিতি।
রাঙামাটি থেকে দুর্গম বিলাইছড়ি যাওয়ার একমাত্র ব্যবস্থা কাপ্তাই লেক ধরে নৌ-পথ। এখানে কথা হয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রাসেল মারমার সাথে। মাস খানেক আগে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন তিনি। জায়গাটি থানা থেকে বড়জোর দু’শ গজ।
রাসেল মারমা বলেন, আমার উপর হামলা করার একমাত্র কারণ আমি আওয়ামী লীগ করি। তাদের মতে উপজাতি হলে জেএসএস করতে হবে অন্যকোন দল করা যাবেনা।
কয়েক ঘর পর দেখা, নিহত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তঞ্চঙ্গার পরিবারের সাথে। স্ত্রী-পুত্রের সামনেই গুলি করে হত্যা করা হয় তাকে। এমনই আতঙ্ক ভর করেছে পরিবারটিতে যে, বিচার চাইতেও ভয়।
স্থানীয়রা বলছেন, পাহাড়ের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর যারা জাতীয় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। নির্দেশ না মানলে ঘটছে খুন-জখম।
সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোতে ভাঙন দেখা দিয়েছে নিজেদের বিবাদে। শক্তি বাড়াতে খুন করছে প্রতিপক্ষকে। এজন্য বেড়েছে অস্ত্রের সংগ্রহ। সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, পাহাড়ের চার সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছে আধুনিক অস্ত্র আছে, চার হাজারেরও বেশি। শান্তি চুক্তির পুরো বাস্তবায়নেও বাধা অস্ত্রবাজি। পাহাড়ে অস্ত্রবাজি আর হত্যার জন্য পক্ষগুলো পরস্পরকে দায়ী করছে।
ইউপিডিএফ(ডেমোক্রেটিক) এর প্রধান শ্যামল চাকমা বলেন, সন্তু লারমা নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারছে। তারা চুক্তির বিপক্ষ শক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলছে। এদের দিয়ে কিছু হবেনা।
রাজনীতির নামে খুনোখুনিতে, শান্ত পাহাড়ে অধরাই থাকছে শান্তি।
Leave a reply