রোববার ভোর রাতে বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে প্রায় পুরো লন্ডন শহর। এত বিকট শব্দে ভয় পেয়ে যান বহু মানুষ। উত্তর লন্ডনের বাসিন্দাদের অনেকেই বিস্ফোরণের শব্দ শুনে ঘুম থেকে উঠেছেন। তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পরে জানা যায়, ব্যতিক্রমী এক ঘটনার ফলে এমন বিকট শব্দ হয়েছে আকাশে। ব্রিটিশ বিমান বাহিনীর দুটি যুদ্ধবিমান থেকে এই শব্দ এসেছে। যা ‘সনিক বুম’ নামে পরিচিত।
স্থানীয় সময় রোববার ভোর ৪টা ২০ মিনিটে বিস্ফোরণের শব্দে বাড়ি-ঘর কেঁপে ওঠে। এরপরেই সাইরেন বাজাতে শুরু করে পুলিশ। স্থানীয় এক বাসিন্দা এক টুইট বার্তায় বলেন, উত্তর-পশ্চিম লন্ডনে বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভাঙল। আর কেউ এই শব্দ শুনতে পেয়েছেন?
সেই ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করেছেন যুদ্ধবিমান দুটির সম্মুখে পড়া যাত্রীবাহী একটি বিমানের পাইলট স্টিভেন গিওরদানো।
তিনি বিবিসিকে জানান, ওই দিন তার বিমান জার্মানি থেকে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছিল। লন্ডন শহরের ওপরে যাওয়ার পর তারা হঠাৎ বুঝতে পারেন বিমানের রেডিও সংযোগ কাজ করছে না। তবে এটা প্রথমে তারা বুঝতে পারেননি।
সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ১০ মিনিট পর পাইলটরা টের পান তারা কেন্দ্রের সাথে সংযুক্ত নন। এরইমধ্যে হঠাৎ পাইলটের চোখের সামনে ভেসে ওঠে দুটি যুদ্ধবিমান! যাত্রীবাহী বিমানের খুবই কাছাকাছি। ব্রিটিশ এয়ারফোর্সের ওই দুই যুদ্ধবিমানের পাইলটরাও হঠাৎ বিষয়টি লক্ষ্য করে দ্রুত বিমান সরে যাওয়ার সময় বাতাসের প্রচণ্ড চাপে বিস্ফোরণের মতো বিকট শব্দ হয়।
পাইলট স্টিভেন বলেন, ‘আমি হঠাৎ বামের দিকে তাকিয়ে বিস্মিত হয়ে যাই। হার্ট অ্যাটাকের মতো পরিস্থিতি হয়েছিল আমার। বিমানগুলো এত কাছে চলে এসেছিল। ধন্যবাদ পাইলটরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিল।’
ল্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. জিম ওয়াইল্ড বিবিসিকে বলেছন, কোন বিমান যদি শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিতে( ঘণ্টায় ১২৩৬ কি.মি) চলে তখন বাতাস বিমানটির সামনের দিকে প্রচণ্ড চাপ তৈরি করে। কারণ এই বাতাস সরে যাওয়ার সময় পায় না। এরপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করে বাতাস যখন পাশে সরে যায় তখনই এ ধরনের প্রকট শব্দ হয়। বাতাস বিমানটির সামনের দিকে প্রচণ্ড চাপ তৈরি করে বিমানটি দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে বলে এই শব্দ বিভিন্ন এলাকা থেকে শোনা যায়।
Leave a reply