বেসামাল নিত্যপণ্যের বাজার, দাম কমার লক্ষণ নেই

|

নিত্যপণ্যের দাম কমার লক্ষণ নেই। আজ চালের দাম বাড়ছে তো, কাল সবজি, ময়দা, ভোজ্যতেলের দাম। পেঁয়াজের দাম এখনও আকাশচুম্বীই আছে। গত এক মাসে প্রায় সবকটি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। তবে সামান্য কমেছে কয়েকটির দাম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ডিম, আমদানিকৃত রসুন, ব্রয়লার মুরগি। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ওয়েবসাইটে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বুধবার টিসিবির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাজার দরের তালিকা মতে, গত এক মাসের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। সরু চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫-৬ টাকা। আর মোটা চালের দাম বেড়েছে ২ টাকা। খোলা আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ২ টাকা। আর ময়দার দাম বেড়েছে ৩ টাকা। অবশ্য প্যাকেটজাত আটার দাম কমেছে বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। রান্নার অন্যতম অনুষঙ্গ ভোজ্যতেলের দামও বেড়েছে।

খোলা সয়াবিন তেল, পাম অয়েল দাম লিটারে বেড়েছে ৪-৮ টাকা। মসুর ডালের দামে বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। আলুর দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। পেঁয়াজের দামও গত মাসের চেয়ে বেড়েছে। গত এক বছরে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫৯২ ও ৫৬০ শতাংশ। আর এক মাসের ব্যবধানে দেশি পেয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকা। দেশি রসুন, শুকনা মরিচ, হলুদ, জিরা, দারুচিনি, এলাচ, ধনেপাতা, তেজপাতার দাম বেড়েছে। অন্যদিকে বেড়েছে চিনির দাম। কেজিতে চিনির দাম বেড়েছে ২-৪ টাকা। গুঁড়োদুধ বেড়েছে কেজিতে ১০-২০ টাকা।

টিসিবির তথ্য মতে, দাম কমার তালিয়ায় আছে- ডিম, দেশি-ব্রয়লার মুরগি, রুই মাছ, অ্যাঙ্কর ডাল, তুরস্ক-কানাডার মাঝারি দানার ডাল, আমদানিকৃত রসুন ও আদার দাম।

অবশ্য রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, টিসিবির দামের চাইতে প্রায় সব পণ্যই বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। টিসিবি বলছে, দেশি পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকা। অথচ খোলাবাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি। একই অবস্থা আমদানিকৃত পেঁয়াজের। ১২৫-২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে আমদানিকৃত পেঁয়াজ। আর দেশি নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। যা দু’দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা।

মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২০০-২১০ টাকা। মিসরের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৬০ টাকা। এছাড়া চীন থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা কেজিদরে। মিসরের পেঁয়াজ হয়েছে ১২০ টাকা। আর পেঁয়াজ পাতা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে। অন্যদিকে টিসিবি বলছে, ব্রয়লার মুরগি ১১০-১২০ টাকা কেজি। কিন্তু বাজারে এই মুরগি ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। চিনির দাম টিসিবি বলছে, ৫৮-৬০ টাকা কেজি। কিন্তু বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি।

নিত্যপণ্যের এই বেসামাল ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন আয়ের মানুষদের ভরসা টিসিবির ট্রাক। খিলগাঁও, রামপুরা বাজারের সামনে টিসিবির ট্রাকের সামনে নিু আয়ের মানুষের লম্বা লাইন দেখা গেছে। অনেকে লাইনে দাঁড়িয়েও পণ্য না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন।

খিলগাঁওয়ে সকালে ট্রাক আসার আগেই লাইনে দাঁড়ান মানুষ। ট্রাক আসতেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি। শুধু পেঁয়াজ নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যই নিম্নবিত্তের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় সাধারণ মানুষকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল কিনতে দেখা গেছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply