থি ফুয়ংয়ের বয়স মাত্র ২৬ বছর। বাড়ি ভিয়েতনামের বেন ত্রি প্রদেশের গিয়োংট্রম জেলায়। মেয়েটি দিব্যি সুখের সংসার করে চলছিলেন। কিন্তু সাজানো জীবনটা বদলে গেল তিন বছর আগে। খুব আগ্রহ নিয়েই থি রান্না করেছিলেন সামুদ্রিক খাবার।
খাবার খেয়ে পরিবারের অন্যদের তেমন কিছু ঘটল না। কেবল থির শরীরেই উঠল অ্যালার্জি। গা-ভর্তি অ্যালার্জির চুলকানিতে রাতে ঘুমাতে পারতেন না তিনি। একদিন আর না পেরে সকালে ঘুম থেকে উঠেই গেলেন স্থানীয় ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার অ্যালার্জির ওষুধ দিলেন। ওষুধ খাওয়ার পরদিনই নিজেকে আর চিনতে পারলেন না থি। স্বামী থানহ তুইয়েনও বউকে চিনতে পারলেন না।
থানহ ভাবলেন, এত সকালে বাড়িতে এ বুড়ি এলেন কোত্থেকে? তাও আবার তার বিছানায় শুয়ে আছেন! চমকে উঠলেন থানহ, যখন ওই বুড়ি কথা বলে উঠলেন। গলা যে ঠিক তার বউয়ের মতোই! প্রথমদিকে ভৌতিক কাণ্ডই মনে হচ্ছিল থানহের কাছে। কোনো ডাইনি বুড়ি কি তার স্ত্রীর ওপর ভর করেছে- একবার এমনও ভাবলেন তিনি। কিন্তু না, কয়েকদিন পর নিজের ভুল বুঝতে পারলেন এবং আবিষ্কার করলেন, তার স্ত্রী আগের মতোই আছেন।
কেবল তার শরীরের চামড়া হয়ে গেছে বুড়িদের মতো। স্ত্রীর এ অবস্থা দেখে তাকে নিয়ে অনেক চিকিৎসকের কাছে ঘুরলেন স্বামী। চিকিৎসকের পরামর্শে অনেক ওষুধও ব্যবহার করলেন, কিন্তু কাজ হল না কিছুতেই। আরোগ্য লাভের আশায় গেলেন চীনা বিশেষজ্ঞদের কাছে।
তারা জানালেন, মাছে বিষ ছিল এবং তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেই এ অবস্থা হয়েছে সুন্দরী মেয়েটির। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারা যে ওষুধ দিলেন, তার দাম অনেক। স্বল্প আয়ে সংসার চালানোই কঠিন, সেখানে এত দামি ওষুধ খাবেন কী করে? তারপরও সহায়-সম্বল সব বিক্রি করে স্বামী থানহ সেই সুন্দরী স্ত্রীকে ফিরে পাওয়ার আশায় দামি ওষুধই কিনে খাওয়ালেন। কয়েক মাস পার হলেও থির আগের অবস্থা ফিরে এল না।
বাধ্য হয়ে স্বামী তার বর্তমান অবস্থাকেই মেনে নিলেন। এ দুঃখের মধ্যেও থির একটাই সান্ত্বনা- স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যাননি। বরং এখন আরও বেশি সময় দেন। স্ত্রীর চিকিৎসা ও সহযোগিতার জন্য ২০০৯ সালে চাকরিও ছেড়েছেন তিনি।
ভিয়েতনামের এক সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, স্ত্রীর বর্তমান এমন রূপ নিয়ে তার মধ্যে এখন আর কোনো আফসোস নেই। স্ত্রী জীবিত আছেন এবং তারই তো আছেন- সেটাই বড় কথা।
Leave a reply