বছরজুড়ে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাজারের হিসাব মিলাতে হিমশিম খেয়েছেন ক্রেতারা। সবচেয়ে বেশি বেসামাল ছিল চাল আর পেঁয়াজের বাজার। পেঁয়াজের দাম বেড়েছে দু’গুণেরও বেশি। লক্ষ্যমাত্রার বাইরে ছিল খাদ্য মূল্যস্ফীতির সীমা। যদিও পরিকল্পনা বিভাগ বলছে, মানুষের আয় বাড়ার কারণে নিত্যপণ্যের দামবৃদ্ধির প্রভাব ততটা প্রকট হয়নি। ক্রেতাদের অভিযোগ অসাধু চক্রের দাপটে বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ কমেছে।
চলতি বছরের শুরুটা মন্দ ছিলো না। মোটা চালের দাম ছিল ৩৫ টাকা। সবজির দরদাম নিয়েও চিন্তা ছিলো না গ্রাহকের। কিন্তু বিপত্তি বাধে ফেব্রুয়ারিতে। হঠাৎ বন্যায় তলিয়ে যায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণার বিস্তীর্ণ হাওর এলাকা। ধান নষ্ট হয় প্রায় ৬ লাখ টন। এপ্রিলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হলেও, বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি স্বর্ণা ও ইরি মিলছে ৪২ থেকে ৪৬ টাকা। গেল বছরের একই সময়ে যা ছিলো ৩৫ থেকে ৩৮ টাকার আশপাশে। আগের চেয়ে ১৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে মিনিকেট-নাজিরশাইল। আর পাইজামের মত মাঝারি মানের চাল বিকোচ্ছে ২০১৬’র চেয়ে ৫ থেকে ৬ টাকা বাড়তি দরে।
আমদানি জটিলতা আর ডলারের দরবৃদ্ধির কারণে সেপ্টেম্বর থেকে চড়া ছিল পেঁয়াজের বাজার। বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় শেষ প্রান্তিকে পণ্যটির দাম বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। মাঝে ধর্মঘটের ধোয়া তুলে গরু ও খাসির মাংসের দাম বাড়ান ব্যবসায়ীরা। যদিও, বছর জুড়ে স্বস্তি ছিলো চিনি, ভোজ্যতেল, ডাল ও আটার বাজারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির দোহাই দিয়ে বাজারে অতি মুনাফার সুযোগ থাকা গ্রহণযোগ্য নয়।
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম মতে, দ্রব্য মূল্যের বৃদ্ধি মানুষের আয়ত্ত্বের মধ্যে। উচ্চ প্রবৃদ্ধি কালে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ে। আর মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি আশঙ্কা নয় কারণ যে হারে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে তার থেকে আয় বাড়ছে বেশি।
তবে, বিআইডিএস এর সাবেক মহাপরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য সরকারকে দায়ী করছেন।
যমুনা অনলাইন: এমআইআর/
Leave a reply