এই সুযোগেরই যেন অপেক্ষায় ছিলেন মুশফিকুর রহিম। পাকিস্তান সফর থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর বাঁকা কথা শুনতে হয়েছিল অনেক। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে রাজসিক ডাবল সেঞ্চুরি করে প্রত্যাবর্তন করলেন। সেই সাথে সমালোচকদের যেন বার্তা দিলেন, এবার ক্ষ্যান্ত দিন। টেস্টে মুশফিকের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরির পর ইনিংস ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। লিড ২৯৫ রানের।
মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিন থেকেই বল সোজা ব্যাটে আসছিল। স্বভাবতই ছন্দময় ব্যাটিং করছেন মুশফিকুর রহিম। ব্যাটকে কখনো ঢাল, কখনো তলোয়ার বানিয়ে জিম্বাবুয়ে বোলারদের হতাশ করছেন তিনি। ইনিংসের ১৫৪-তম ওভারে এনদিলোভুর বলে বাউন্ডারি হাকিয়ে ডাবল সেঞ্চুরি করেন তিনি।
এদিন আরেকটি রেকর্ড গড়েছেন মুশফিক। বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন তিনি। ৪৪১৩ রান নিয়ে সবার ওপরে উঠলেন নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। তার চেয়ে ৮ রান কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন ওপেনার তামিম ইকবাল। ৩৮৬২ রান নিয়ে তৃতীয় স্থানে জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা সাকিব আল হাসান।
৬ উইকেটে ৫৫৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করে অধিনায়ক মুমিনুল। তারমধ্যে তাড়াহুড়া ছিল। সেটা যে শেষ বিকেলে স্পিন ঘূর্ণিতে জিম্বাবুয়েকে কাবু করার জন্য তা আর না বললেও চলছে। প্রথম ওভারেই ২ উইকেট তুলে নিয়ে তার সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক প্রমাণ করতে দেরি করলেন না স্পিনার নাঈম হাসান।
এর আগে, আগের দিনের ৩ উইকেটে ২৪০ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। সোমবার মুমিনুল হক ৭৯ এবং মুশফিক ৩২ রান নিয়ে খেলার গোড়াপত্তন করেন। স্বাচ্ছন্দে খেলতে থাকেন তারা। মধ্যাহ্নভোজের আগে সেঞ্চুরি করেন মুমিনুল, পরে মুশফিক।
ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৯ সেঞ্চুরির মালিক তামিম ইকবাল। দুর্দান্ত শতকে সেই রেকর্ডে ভাগ বসালেন মুমিনুল। হঠাৎ ছন্দপতনে এন্সলে এনদিলোভুর কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ফেরার আগে ১৪ চারে ১৩২ রানের অনিন্দ্যসুন্দর ইনিংস খেলেন তিনি। মুশির সঙ্গে ২২২ রানের জুটি গড়ে তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েসের রেকর্ড ভাঙলেন। তিনি ফিরে গেলে ক্রিজে আসেন মিথুন। তিনি ১৭ করে ফিরে গেলেও এরপর ক্রিজে আসা লিটন ৯৫ বলে ৫৩ রানের কার্যকর ইনিংস খেলেন।
এদিকে, লাঞ্চের পরই সপ্তম সেঞ্চুরি এবং শেষ বিকেলে তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২০৩ রানে। তার সবশেষ ডাবলটিও ছিল জিম্বাবুইয়ানদের বিপক্ষে। গেল নভেম্বরে ঘরের মাঠে।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৫৪ ওভারে ৫৬০/৬ (ডিক্লেয়ার) (মুশফিক ২০৩*, মুমিনুল ১৩২, শান্ত ৭১, লিটন ৫৩, তামিম ৪১, মিথুন ১৭, তাইজুল ১৪*, সাইফ ৮; এনদিলোভু ৪২-৪-১৭০-২, তিরিপানো ৩০-৬-৯৬-১, রাজা ৩০-২-১১১-১, টিসুমা ২৫-২-৮৫-১, নিয়াউচি ২৭-৩-৮৭-১)
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ১০৬.৩ ওভারে ২৬৫ (মাসভাউরে ৬৪, কাসুজা ২, আরভিন ১০৭, টেইলর ১০, রাজা ১৮, মারুমা ৭, চাকাভা ৩০, তিরিপানো ৮, এনদিলোভু ০, টিসুমা ০, নিয়াউচি ৬*; এবাদত ১৭-৮-২৬-০, আবু জায়েদ ২৪-৬-৭১-৪, নাঈম ৩৮-৯-৭০-৪, তাইজুল ২৭.৩-১-৯০-২)।
Leave a reply