দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার প্রতিবাদে শনিবার ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশের বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরে বিক্ষোভ ডেকেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার বিকালে নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী এ ঘোষণা দেন।
রিজভী বলেন, শনিবার ঢাকাসহ সারা দেশের বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়া শনিবার দুপুর ২টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। এর আগেও তিন দফা এই মামলায় জামিন চেয়ে পাননি খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, এই খারিজ আদেশের মধ্য দিয়ে সরকারের হিংসাশ্রয়ী নীতিরই প্রকাশ হয়েছে।
এ সময় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা অভিযোগ করে বলেন, এই সরকার দেশনেত্রীকে অন্যায়ভাবে সব ধরনের আইনি অধিকার হরণ করে কারারুদ্ধ করে রেখেছে।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি খালেদা জিয়া ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দল ও পরিবারের সদস্যরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে অন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে তাতে অনুমতি মেলেনি।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় জামিন চেয়ে এর আগেও হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। কিন্তু অপরাধের গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট আইনের সর্বোচ্চ সাজা এবং বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত- এমন তিন বিবেচনায় হাইকোর্ট বেঞ্চ ৩১ জুলাই সেই আবেদন খারিজ করে দেন। এর পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিল বিভাগে যান। কিন্তু খালেদা জিয়া জামিন পাননি।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে জামিন আবেদনটি খারিজ করে দেন।
আপিল বিভাগের ওই রায়ে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসনের সম্মতি থাকলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে দ্রুত ‘অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্ট’ দেয়ার পদক্ষেপ নিতে।
সেই রায় ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত হওয়ার পর হাইকোর্টে নতুন করে জামিন আবেদন করার উদ্যোগ নেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ৩৬টি মামলার মধ্যে ৩৪টি মামলায় খালেদা জিয়া জামিনে আছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
Leave a reply