প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রাণহানির সংখ্যা এখন ৯ হাজার ছুঁই ছুঁই। আর আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৮৪ হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরা।
বিএনও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসে বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৯২৫ জনে। তবে জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বলছে– প্রাণহানি ৮৮০০ জন। এরই মধ্যে বিশ্বের ১৭৩ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস।
সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে ইতালিতে। দেশটিতে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ইতালিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৯৭৮ জনে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৭১৩ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন চার হাজার ২৫ জন।
তবে করোনা যেখান থেকে ছড়িয়েছে সেই চীনের উহানে করোনা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। গতকাল সেখানে কেউ মারা যায়নি।
ইউরোপে করোনায় আক্রান্তের পাশাপাশি চলছে মৃত্যুর মিছিল। কানাডায় সারা দেশে কোয়ারেন্টিন ঘোষণা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।
ইউরোপে ইতালির পর করোনায় সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছে স্পেন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৭৬৯ জনে।
ফ্রান্সে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৬৪ জনের। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ১৩৪ জন। করোনা মোকাবেলায় দেশটিতে নামানো হচ্ছে সেনাবাহিনী।
যুক্তরাজ্যে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা শতাধিক। আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৬২৬ জন। জার্মানিতে ২৮ জন মৃত্যুর পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৩২৭ জন। সুইজারল্যান্ডে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার ২৮ জন। নেদারল্যান্ডসে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জনের। অন্যদিকে আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৫১ জন।
করোনার সংক্রমণ বিপর্যয় ডেকে এনেছে ইরানে। এরই মধ্যে ইরান সরকারের হিসাবে, দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ১৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৩৬১ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ৭১০ জন।
মৃত্যু আর সংক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দেশটি। দোকানপাট খোলা থাকলেও নাগরিকদের ঘরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ৮৫ হাজার কারাবন্দিকে দেয়া হয়েছে সাময়িক মুক্তি। নতুন করে আজ আরও ১০ হাজার বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
এদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দুঃসংবাদ শুনেছে বাংলাদেশ। বুধবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। এ ছাড়া দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ জন বলেও জানানো হয়।
আইইডিসিআর পরিচালক জানান, নতুন আক্রান্ত চারজনের মধ্যে তিনজন সদ্য বিদেশ (দুজন ইতালি, একজন কুয়েত) থেকে এসেছেন এবং অপরজন তাদের একজনের সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ প্রথমবারের মতো দেশে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর। তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী ছিলেন। তবে প্রথম আক্রান্ত হওয়া তিনজনই সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর।
Leave a reply