নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে লকডাউনের মধ্যে ধুমধাম করে পারিবারিকভাবে বিয়ে করলেন এক সরকারি কর্মকর্তা।
সোনারগাঁ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা দফতরের ওই কর্মকর্তা সোনারগাঁ পৌরসভার পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক হিসেবে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন।
অভিযোগ উঠেছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকারি ছুটি পাওয়ায় নিজ বাড়ি সোনারগাঁ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোচাইট গ্রামে বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে লোক সমাগমের আয়োজন করে বিয়ে করেন ওই কর্মকর্তা।
সরকারের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জারি করা নারায়ণগঞ্জের লকডাউনকে অমান্য করে বিয়ের আয়োজন করায় পুরো পৌর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত বুধবার সন্ধ্যায় ওই বিয়ে বাড়িতে অভিযান চালায়।
এসময় সরকারি কর্মকর্তা শাহীন কবির (বর) ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ি থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিয়ের অনুষ্ঠানে লোক সমাগমের অভিযোগে ওই সরকারি কর্মকর্তার ছোট ভাই সোহেল মিয়াকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
বিয়েতে উপস্থিত থাকা এলাকার এক বাসিন্দা জানান, পৌরসভার পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক শাহীন কবির উপজেলার সনমান্দি গ্রামের জামাল উদ্দিনের মেয়ে নাদিয়া আক্তারকে বিয়ে করেন।
বিয়ের অনুষ্ঠানের তারিখটি অনেক আগে থেকেই নির্ধারণ করা ছিল। সরকারি কর্মকর্তা বিধায় তিনি নিজে ৭০ জন বরযাত্রী নিয়ে সাহসীকতার সঙ্গে লকডাউনের মধ্যেই বিয়ে সম্পন্ন করেন। বিয়ে বাড়িতে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে খাওয়া দাওয়া হয়। সেখানেই কাজি আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে পড়ান।
করোনাভাইরাসের এ পরিস্থিতিতে এতো লোক নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ায় কনের বাড়ির এলাকার লোকজন বর পক্ষকে তুলোধুনা করেন। এতে বরপক্ষের লোকজন ধীরে ধীরে সটকে পড়েন।
গোচাইট গ্রামের বাসিন্দা রহিম বেপারী জানান, বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেক লোক এসেছে রাজধানী ঢাকা থেকে। আমাদের এখন ভয় হচ্ছে এরা এখানে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে গেলো কিনা।
তবে এ ব্যাপারে সরকারি কর্মকর্তা শাহীন কবির মোবলি জানান, আমি আপাতত কাবিনটা সম্পন্ন করে রেখেছি। এটি একেবারেই ছোট পরিসরে ছিল। শুধুই পারিবারিক। বউভাতের আয়োজন এখনও করিনি। পরিস্থিতি ভালো হলে বড় করে আয়োজন করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইদুল ইসলাম জানান, একজন সরকারি কর্মকর্তার এহেন কর্মকাণ্ডে আমরা বিব্রত। এটি তিনি কিভাবে করলেন আমার মাথায় আসছেনা। আপাতত তাকে না পেয়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেটি তার ভাই পরিশোধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার সুপারিশ করা হবে।
Leave a reply