করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে মৌসুমি রোগে পরিণত হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন চীনা গবেষকদের একটি দল। তারা বলছেন, নভেল করোনাভাইরাস বিশ্ব থেকে পুরোপুরি নির্মূল হবে না। ফি-বছর নতুন নতুন রূপ নিয়ে ফিরে আসবে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস। চীনের কয়েকজন শীর্ষ গবেষক দাবি করেছেন, সংক্রমিত অঞ্চলগুলো থেকে করোনা পুরোপুরি দূর হবে না কখনও। বিপুলসংখ্যক উপসর্গহীন কোভিড-১৯ রোগীর কারণে প্রতি বছর এ রোগের ফিরে আসার বেশ জোরালো আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে চীনে বারবার ফিরে আসছে করোনা। কয়েক দিন বা সপ্তাহখানেক সংক্রমণহীন থাকার পর আবার নতুন করে কয়েকজন আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে বিজ্ঞানীদের এমন আশঙ্কা সত্যি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীনের শীর্ষ চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্যাথোজেন বায়োলজি ইন্সটিটিউটের পরিচালক জিন কি ব্লুমবার্গকে বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের দীর্ঘস্থায়ী মহামারী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খুব সম্ভবত মানুষের সঙ্গে এর সহাবস্থান অনেক দিনের হবে। এক পর্যায়ে এটি একটি মৌসুমি রোগ হিসেবে জায়গা করে নেবে ও মানবদেহের মধ্যে টিকে থাকবে। এটি আসলে পুরোপুরি অদৃশ্য হওয়ার মতো নয়। বরং প্রতি বছরই কোনো না কোনোভাবে এর প্রত্যাবর্তনের আশঙ্কা রয়েছে। একই কথা বলেছেন দেশটির ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের পরিচালক ড. অ্যান্থনি ফাউসি। তিনি জানিয়েছেন, আমরা হয়তো আর কখনই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে পারব না। আমরা যদি দ্রুত ভাইরাসটির সংক্রমণের আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে না পারি, তবে আমাদের জন্য প্রত্যাবর্তন কঠিন হয়ে যাবে।’ গবেষকরা জানিয়েছেন, নভেল করোনাভাইরাস তার সমগোত্রীয় অন্য ভাইরাসগুলোর মতো নয়।
‘সার্স-কোভ-২’ স্ট্রেইনের ভাইরাসটি নিজস্ব গোত্রের ‘সার্স’ বা ‘মার্স’ ভাইরাসের তুলনায় ভিন্ন আঙ্গিকে সংক্রমিত হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগীকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হলে এর সংক্রমণ সেখানেই সীমিত থাকে। কিন্তু নভেল করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে বিষয়টি তা নয়, বরং এটি ছড়াতেই থাকে। আর উপসর্গহীন হওয়ার ফলে এ ভাইরাসটি শনাক্ত করাও কঠিন। তার ওপর বিশ্বজুড়ে ভাইরাসটির পরীক্ষা এখনও সীমিত। তাই উপসর্গহীন এ ভাইরাস একবার দীর্ঘ সংক্রমণের পথে চলতে শুরু করলে তা নির্মূল হওয়া কঠিন হয়ে যাবে।
Leave a reply