২০৩০ সালে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রয়োজনের চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি থাকবে। এর কারণ বাংলাদেশে চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এ কারণে এ খাতে ভর্তুকির পরিমাণও বাড়ছে। আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারছে না বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনোমিকস ফাইনান্সিয়াল অ্যানালিসিস (আইইইএফএ) -র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাত্র ৪৩ শতাংশ ব্যবহার করা হয়, বাকি ৫৭ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস বসিয়ে রেখে ভাড়া দেওয়া হয়। এ কারণে বাংলাদেশে বিদ্যুতে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ছে। গত অর্থ বছরে অলস বসিয়ে রেখে এসব বেসরকারি কেন্দ্রগুলোকে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। এ কারণে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ না করার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।
সোমবার তাদের ওয়েব সাইটে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের ওপর ‘বাংলাদেশ পাওয়ার রিভিউ ওভার ক্যাপাসিটি, ক্যাপাসিটি পেমেন্ট, সাবসিডিজ অ্যান্ড ট্যারিফ আর সেট টু রাইজ ইভেন ফাস্টার’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে আইইইএফএ।
আইইইএফএ’র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ২০১০ সালে বিদ্যুত খাত নিয়ে পরিকল্পনা করে যেটি ২০১৬ সালে সংশোধন করে। এই পরিকল্পনায় দেশটি দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়াতে আমদানিকৃত কয়লা এবং তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি ) ওপর জোর দিয়েছে। এ ধরনের পরিকল্পনা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক নয় বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ অব্যাহত থাকলে ২০২৯-৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা হবে প্রকৃত চাহিদার চেয়ে ৫৮ শতাংশ বেশি। অলস পড়ে থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কেন্দ্রের বিপুল পরিমাণ ভাড়া গুনতে হবে বাংলাদেশকে। এছাড়া, করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদাও কমে যাবে এবং ২০২৯-৩০ সাল নাগাদ চাহিদা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক কম হবে। ফলে অলস বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো অর্থনীতিতে চাপ তৈরি করবে।
আইইইএফএ’র এই প্রতিবেদনের গবেষক সাইমন নিকোলাসের মতে, বাংলাদেশের এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও বিদ্যুতের ওপর জোর দেয়া উচিত। পাশাপাশি, ব্যয়বহুল ও আমদানিকৃত কয়লা ও এলএনজির পরিকল্পনা থেকে সরে আসা উচিত।
Leave a reply