আবারও শিশু খাদ্যপণ্য নিয়ে বিতর্ক। এবার, ফরাসি দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত উৎপাদক প্রতিষ্ঠান- ল্যাকটালিসের পণ্যে মিললো ক্ষতিকর ‘সালমোনেলা’ ব্যাকটেরিয়া। ইতিমধ্যে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৮৩ টি দেশের বাজার থেকে তুলে নেয়া হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ গুড়ো দুধের প্যাকেট। ক্ষতিকর এই ব্যাকটেরিয়ায় গ্রিস-স্পেন ও ফ্রান্সে আক্রান্ত হয়েছে কমপক্ষে ৩৭ শিশু। যাদের, ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে ফরাসি প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে, বাংলাদেশের বাজার থেকেও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির কারণে ল্যাকটালিসের শিশু খাদ্য প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়ে হয়েছে।
ইউরোপ, আফ্রিকা আর বাংলাদেশসহ এশিয়ার বাজারগুলোয় শিশু খাদ্যপণ্য- ল্যাকটালিস নিয়ে বিরাজ করছে আতঙ্ক। অভিভাবকরা তো বটেই, ব্যবসায়ীরাও বিক্রয়কেন্দ্র থেকে দ্রুত সরাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য।
অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ৮৩ দেশ থেকে এক কোটি ২০ লাখ প্যাকেট গুড়ো দুধ তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। একইসাথে, ভুক্তভোগী শিশুদের চিকিৎসার সব ব্যয় বহনেরও আশ্বাস দিয়েছে । যাদের মধ্যে, ৩৫ শিশুই ফ্রান্সের; বাকি দু’জন গ্রিস ও স্পেনের।
ফ্রান্সের ল্যাকটালিস গ্রুপের মুখপাত্র মিশেল নালে জানান, গেলো ডিসেম্বরেই প্রতিষ্ঠান সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ক্যারন শহরে আমাদের উৎপাদক খামারটি বন্ধ করে দেয়া হবে। এর আগেই ঘটলো এমন দুঃখজনক ঘটনা। আমরা তদন্তের পাশাপাশি প্রত্যেক অভিভাবককে জবাবদিহি করতে বাধ্য। বিষক্রিয়া যেন আরও না ছড়ায়, সেজন্য পণ্যগুলো বাজার থেকে দ্রুততার সাথে তুলে নেয়া হচ্ছে। আমাদের জানা মতে, ৩০টি দেশের পণ্যে মিলেছে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি।
চিকিৎসকরা বলছেন, গুড়ো দুধটি খাওয়ার পর ‘স্যালমোনেলা’ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমন হচ্ছে শিশুর শরীরে। যা একইসাথে বমি, ডায়রিয়ার পাশাপাশি প্রচণ্ড পেটব্যাথার সৃষ্টি করে। সুষ্ঠু সেবা না পেলে প্রাণও হারাতে পারে আক্রান্ত শিশু। তাই, ফ্রান্স সরকারের পক্ষ থেকেও জারি করা হয়েছে সতর্কতা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, ডায়রিয়াজনিত রোগের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা প্রধান চারটি বৈশ্বিক কারণের একটি এই ‘সালমোনেলা’ ব্যাকটেরিয়া।
অধিকতর ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে, ল্যাকটালিসের উৎপাদক প্রতিষ্ঠান, তাদের উৎপাদিত পণ্যের মেয়াদ এবং সরবরাহকারী খামারগুলোর ব্যাপারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লে মেইরি। বলেন, আনুষাঙ্গিক তদন্ত চলছে। মনুষ্যসৃষ্ট কোনো ভুলের কারণে বিষয়টি এতো গুরুতর অবস্থায় পৌঁছেছে কিনা, সে বিষয়গুলোও রাখা হয়েছে নজরদারিতে।
ফরাসি ম্যাগাজিন ‘শ্যালজ’ -এর ২০১৭ সালের জরিপে বলা হয়, দেশটির ১১তম ধনকুবের ল্যাকটালিস গ্রুপের মালিক ও ডেইরি টাইকুন ইমানুয়েল ব্যাজনিও। অবশ্য ব্যবসায়িক খ্যাতির তুলনায় রাজনীতিকদের সাথে সখ্য’র কারণেই তিনি বেশি পরিচিত।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply