সড়ক উন্নয়নের জন্য মানিকগঞ্জে প্রায় চার হাজার গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে। অথচ সামাজিক বনায়নের এই গাছগুলো বিক্রির আগে জানানো হয়নি, এমনটাই অভিযোগ করছেন অংশীদাররা। তাদের অভিযোগ, দরপত্রের মাধ্যমে কোটি টাকায় গাছগুলো বিক্রি করা হলেও তাদের প্রাপ্য অংশ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
নিজের সন্তানের মতোই লালন-পালন করেছেন যে গাছ, তা চোখের সামনেই কেটে নেওয়া হচ্ছে। অংশীদার দাবি করা একজন নারী বলেন, “আমরা অনেক আশা করে, টাকা-পয়সা খরচ করে গাছগুলো রোপন করেছিলাম। আমাদের ভবিষ্যতের জন্য রোপন করেছিলাম গাছগুলো।
সামাজিক বনায়নের আওতায়, ২৭ বছর আগে একটি বেসরকারী সংস্থার উদ্যোগে হোমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের দুই পাশে এ সব গাছ রোপণ করেছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু তাদের না জানিয়েই, সড়কের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে প্রায় চার হাজার গাছ কেটে বিক্রি করে দিয়েছে জেলা পরিষদ।
অপর একজন নারী বলেন, “প্রথমে চাঁদা উঠিয়ে আমরা গাছগুলো রোপন করেছিলাম। তারপর সার দিছি, খুঁটি দিছি, পাহারা দিছি।”
স্থানীয়রা জানান, সিংগাইরের জয়মণ্ডপ থেকে ডেপলতলি পর্যন্ত ১০টি সমিতির দুই শতাধিক সদস্য এই গাছের অংশীদার। চুক্তি অনুযায়ী, তারা পাবেন লাভের ৬০ ভাগ। বাকি ৪০ ভাগের মধ্যে বাস্তবায়নকারী সংস্থা ২০ ভাগ এবং উপজেলা পরিষদ ২০ ভাগ অংশের মালিক। কিন্তু তাদের কারোরই প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।
ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম বলেন, “সরকারি এ টেন্ডার জেলা পরিষদ থেকে নিয়েছি। তারপর টাকা জমা দিয়ে কাটছি (গাছ)।”
গাছগুলোর অংশীদার দাবি করা অপর এক ব্যক্তি বলেন, “কার জন্য এ গাছ এত বড় হইছে? একটা গাছের দাম ৫০ হাজার, ৬০ হাজার টাকা দাম আছে। আমাদের ডাকলো না, টাকা-পয়সাও দিল না।”
এমনই আরেকজন অংশীদার বলেন, “টিএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি, যেন এ অংশটা (গাছের অংশীদারিত্ব) বুঝে পাই।”
সিংগাইর উপজেলা চেয়াম্যান আবিদুর রহমান রোমান বলেন, “উপজেলা পরিষদ ও প্রশিকা’র নেতৃবৃন্দকে বাদ দিয়ে জেলা পরিষদ নিজ উদ্যোগে এ কাজ করছে। এ ব্যাপারে আমরা কোনো চিঠি পাইনি।”
এ সব বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন টেলিফোনে জানান, উপযুক্ত প্রমাণসহ কেউ দাবি জানালে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Leave a reply