ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পূর্ব রাজাবাজার এলাকাকে রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করে আজ মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন করা হবে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় সংক্রমণ ঠেকাতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এরই অংশ হিসেবে পূর্ব রাজাবাজারের ৮টি প্রবেশ পথের ৭টি কমপক্ষে ১৪ দিন বন্ধ থাকবে; শুধুমাত্র প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য গ্রিন রোডে আইবিএ হোস্টেলের পাশের রাস্তাটি খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার। পরিস্থিতি বিবেচনায় ২১ দিন পর্যন্ত লকডাউন করার প্রস্তুতি আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এরআগে, সোমবার দুপুরে মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবেলার লক্ষ্যে ডিএনসিসি এলাকার জন্য গঠিত কমিটির এক অনলাইন সভায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত আসে। এসময় কিভাবে তা বাস্তবায়ন করা হবে সে সিদ্ধান্তও নেয়া হয়।
এরইমধ্যেই মানুষের মধ্যে সচেতনতার অংশ হিসেবে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। এলাকাবাসীর বেশিরভাগই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করছেন। তবে, লকডাউন নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক ভাবে দেখলেও খেটে খাওয়া মানুষরা বিপাকে পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করছেন। বলছেন, সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সঠিকভাবে কড়াকড়ি আরোপ করা হলে তা সুফল বয়ে আনবে। সেইসাথে নিশ্চিত করতে হবে দরিদ্র মানুষদের খাবার জোগানের বিষয়টি।
লকডাউন চলাকালে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। জনগণের চলাচল অত্যন্ত সীমিত রাখা হবে। লকডাউন চলাকালে পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় বসবাসরত লোকজন বাইরে যেতে পারবেন না এবং বাইরের লোকজন ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন না বলে অনলাইন সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ওই সভা থেকে জানানো হয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয় করা যাবে যা বাসায় পৌঁছে দেয়া হবে। এটুআই ও ইক্যাব যৌথভাবে এটি পরিচালনা করবে। হোম ডেলিভারির জন্য ইতোমধ্যে একদল প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনী তৈরি করা হয়েছে। যাদের অনলাইন সুবিধা নেই, নগদ অর্থে খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করতে চান তাদের জন্য দুই-একটি শাক-সব্জি, মাছ-মাংসের ভ্যান, ভ্যানচালক ও পণ্যসামগ্রী সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্ত করে ভিতরে প্রবেশ করানো হবে।
ডিএনসিসির ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান ইরান পূর্ব রাজাবাজার এলাকার কর্মহীন, অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের একটি তালিকা প্রণয়ন করছেন। তালিকা অনুযায়ী তাদেরকে ডিএনসিসি থেকে ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করা হবে।
এই এলাকার অসুস্থ রোগীদের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক টেলিমেডিসিন সার্ভিস চালু করা হবে। গুরুতর রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারবে। এছাড়া জরুরি সেবা যেমন বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীগণ লকডাউন এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন।
লকডাউন যথাযথভাবে পালিত হওয়ার লক্ষ্যে ঐ এলাকায় পুলিশের টহল থাকবে। এছাড়া মোবাইল কোর্টও পরিচালিত হবে বলে অনলাইন সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
Leave a reply