বিয়ের দাবিতে প্রেমিক লালচাঁদের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন

|

প্রেমিকা শান্তা (বায়ে), প্রেমিক লালচাঁদ (ডানে)।

পাবনা প্রতিনিধি:

পাবনার সাঁথিয়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিক লালচাঁদ খাঁ’র বাড়িতে দিনভর অনশন করেছেন প্রেমিকা শান্তা আক্তার (২৩)। এখন পর্যন্ত তিনি অনশনে রয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের শামুকজানি চকপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। প্রেমিক লালচাঁদ (২৮) শামুকজানি গ্রামের রাহেদ খাঁ’র ছেলে। তিনি ঢাকা ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অনশনরত ঐ যুবতী বেড়া উপজেলার সানিলা শাহপাড়া গ্রামের আতোয়ার প্রামাণিকের মেয়ে।

প্রেমিক লালচাঁদ মেয়েটির সম্পের্কে মামাতো ভাই হয় বলে জানা গেছে।

শান্তা আক্তার জানান, লালচাঁদের সাথে তার দীর্ঘ ছয় বছরের সম্পর্ক। চার বছর আগে শান্তাকে তার বাবা মা পাবনা বিয়ে দেয় এবং একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকেই লালচাঁদ শান্তাকে সে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দিয়ে এক বছর আগে সেখান থেকে তার বিবাহ বিচ্ছেদ করায় এবং তার কথামতই শান্তা তার নানাবাড়ি অর্থাৎ শামুকজানি গ্রামেই থেকে যায়।

শান্তা আরও বলেন, লালচাঁদ প্রতিরাতেই সেখানে যাওয়া আসা করতে থাকে। এভাবে কিছুদিন পার হলে প্রতিবেশি ও লালচাঁদের পরিবার তাদের শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি টের পায়। এরপর লালচাঁদ বুদ্ধি খাঁটিয়ে শান্তাকে নিয়ে বেড়া স্যানিলা পাড়া বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা অবস্থায় লালচাঁদ মাঝে মধ্যে দুই একদিনের জন্য ঢাকায় কলেজে যাওয়া আসা করতো। তার বাড়ির লোকেরা জানতো সে ঢাকাতেই পড়াশোনা করছে।

শান্তা বলেন, কয়েক মাস পর শান্তা লালচাঁদকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলে দেরি আছে। আগে আমার রেজাল্ট হোক তারপর। পুনরায় আবারও লালচাঁদের পরিবার বিষয়টি টের পেয়ে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সেখান থেকে তাকে সরে যেতে বলে।

গত বুধবার (২৬ আগষ্ট) সন্ধায় সে গোপনে ভাড়া বাসা থেকে পালিয়ে যায়। সে সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও জাতীয় পরিচয়পত্রসহ কিছু পোশাক রেখে যায়।

এর পর থেকে তার সাথে প্রতিদিনই যোগাযোগের চেষ্টা করলে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার কথা হয় শান্তার। এসময় বিয়ের কথা বললে সে জানায় তার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়। তাকে বিয়ে করলে নাকি তার বাবা মা তাকে ত্যজ্যপুত্র করবে বলে লালচাঁদ সাফ জানিয়ে দিয়ে ফোন কেটে দেন। এরপর থেকে আর যোগাযোগ করতে পারেননি শান্তা।

এ ঘটনার পর থেকে শান্তা লালচাঁদের বাড়িতে যোগাযোগ করলে স্থানীয় এক নেতা মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাও করে। শান্তা জানান, তাই নিরুপায় হয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন তিনি। প্রেমিক লালচাঁদ তাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবেন বলে ঘোষণা দেয় শান্তা।

এ ব্যাপারে প্রেমিক লালচাঁদ জানান, শান্তা আমার সম্পর্কে আত্বীয় হয় আমি তার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। তবে তার সাথে আমার মাঝেমধ্যে ফোনে কথা হতো। আমাকে ফাঁসানোর জন্য তার এই ষড়যন্ত্র।

করমজা ইউপি চেয়াম্যান হোসেন আলী বাগচী বলেন, যে সব ছেলেরা এ ধরণের ঘৃণিত কাজ করে আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির কামনা করি। আমার নিকট যদি মেয়ে পক্ষের কেউ আসে তবে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, এ ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগ দেয় নাই। অভিযোগ পেলে আইন সহায়তা দেয়া হবে। তবে বিয়েশাদী দেয়া পুলিশের কোন দায়িত্বে পড়ে না।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply