মহানায়ক উত্তম কুমারের জন্মদিন আজ। ১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কলকাতার সাউথ সাবার্বান স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন এবং পরে গোয়েঙ্কা কলেজে ভর্তি হন। কলকাতার পোর্টে চাকরি নিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে পারেননি।
উত্তম কুমারের প্রকৃত নাম অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়। তিনি একজন ভারতীয়-বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা, চিত্রপ্রযোজক এবং পরিচালক। বাংলা চলচ্চিত্র জগতে তাকে ‘মহানায়ক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
পরিবারের তিন সন্তানের মধ্যে উত্তম কুমার ছিলেন সবার বড়। তার ছোট ভাই তরুণ কুমার একজন শক্তিশালী অভিনেতা ছিলেন। উত্তম কুমার গৌরী দেবীকে বিয়ে করেন। ১৯৬৩ সালে উত্তম কুমার তার পরিবার ছেড়ে চলে যান। দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি তৎকালীন জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে বসবাস করেন, তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
উত্তম কুমারের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল দৃষ্টিদান। এর আগে উত্তম কুমার মায়াডোর নামে একটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছিলেন কিন্তু সেটি মুক্তিলাভ করেনি। বসু পরিবার চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর সাড়ে চুয়াত্তর মুক্তি পাবার পরে তিনি চলচ্চিত্র জগতে স্থায়ী আসন লাভ করেন। সাড়ে চুয়াত্তর ছবিতে তিনি প্রথম অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের বিপরীতে অভিনয় করেন। এই ছবির মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সফল উত্তম-সুচিত্রা জুটির সূত্রপাত হয়।
এ জুটির সেরা চলচ্চিত্র হল- হারানো সুর, পথে হল দেরী, সপ্তপদী, চাওয়া পাওয়া, বিপাশা, জীবন তৃষ্ণা, অগ্নিপরীক্ষা এবং সাগরিকা।
উত্তম কুমারের চলচ্চিত্রজীবন ৩০ বছরের। এই সময়টাতে তিনি অভিনয় করেছেন প্রায় ২০১টি ছবিতে। তার বিপরীতে নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ৩৫ জন অভিনেত্রী। সুচিত্রা সেনের সঙ্গে অভিনয় করেছেন ২৯টি ছবিতে। তবে সর্বাধিক ৩২টি ছবিতে অভিনয় করেছেন সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে।
উত্তম কুমার বাংলা চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন। তার অভিনীত হিন্দি চলচ্চিত্রের মধ্যে ছোটিসি মুলাকাত, অমানুষ এবং আনন্দ আশ্রম অন্যতম। তিনি সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় দু’টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। প্রথমটি নায়ক এবং দ্বিতীয়টি চিড়িয়াখানা।
১৯৬৭ সালে `অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি` ও `চিড়িয়াখানা` ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। `
১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে চির বিদায় নিয়েছিলেন তিনি।
Leave a reply