ভোট গণনা আর ফল প্রকাশের দীর্ঘসূত্রতায় বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প সমর্থকদের সশস্ত্র হামলায় বন্ধ করা হলো অ্যারিজোনার ভোট গণনা কেন্দ্র। দাঙ্গা পরিস্থিতির মুখে, পোর্টল্যান্ডে নামানো হয়েছে ন্যাশনাল গার্ড। জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে নিউইয়র্ক-মিনেসোটায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ধরপাকড় চালাচ্ছে পুলিশ।
সহিংসতায় রূপ নেয় নিউইয়র্কের ম্যানহাটন, ওরিগনের পোর্টল্যান্ডসহ বিভিন্ন শহরের বিক্ষোভ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে যায় প্রশাসন।
ফল প্রকাশের আগেই গণনা বন্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মামলার জেরে ছড়ায় উত্তাপ। বিক্ষোভ হয় রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, ক্যালিফোর্নিয়া, শিকাগো, মিনেসোটা, ফিলাডেলফিয়াতেও।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, প্রতিটি ভোট গণনার দাবিতে আয়োজিত নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে হাজারো মানুষের নির্বাচনি শোভাযাত্রা সহিংস হয়ে ওঠে।
অ্যারিজোনার মেরিকোপা কাউন্টির একটি ভোট গণনা কেন্দ্রের বাইরে রিপাবলিকান সমর্থকদের বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ফলে ভোট গণনা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ট্রাম্পের পক্ষে পড়া ভোট গণনা করা হবে না – সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন দাবি ছড়িয়ে পড়ার পর ট্রাম্পের সমর্থকেরা ভোট গণনা কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান নেয়। অনেক বিক্ষোভকারী ভোটকেন্দ্রে ঢুকে পড়ার পর তাদেরকে আবার বাইরে বের করে আনা হয়। বিক্ষোভকারীরা বড় ধরনের ভাঙচুর চালিয়েছে।
কয়েকটি গণমাধ্যমের পূর্বাভাসে অ্যারিজোনায় বাইডেনকে জয়ী বলা হলেও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, অ্যারিজোনার ফল কী হবে তা এখনো ধারণা করা যাচ্ছে না।
বাইডেনপন্থী বিক্ষোভকারীরা বলছেন, ট্রাম্প যেরূপ আমেরিকা চান, আমরা তেমনটা চাই না। আমরা প্রত্যেকের জন্য সমতা চাই, সমান অধিকার আর সমান সুযোগ। ফ্যাসিবাদী প্রেসিডেন্ট অভ্যুত্থানের সুযোগ খুঁজছেন। তাকে রুখতে রাজপথে নেমেছি। দেশের এই সংকটে প্রতিটি ভোট গোনার বিকল্প নেই। আমাদের দেশ এক দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ভোট চুরি হতে দিলে ভয়ঙ্করভাবে তার ফল ভোগ করতে হবে দেশের প্রতিটি মানুষকে।
কিছু মানবাধিকার সংগঠনগুলোও ট্রাম্পের অন্যায্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।
এলা বেকার সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস’র সংগঠক জোস বার্নাল বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহে কী ঘটতে পারে, তা নিয়ে উদ্বেগ ছিল। গণতন্ত্র রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থেকে নিজেদের সব শক্তি ঢেলে দেবো।
দ্রুততম সময়ে ফলপ্রকাশের দাবিতে কিছু জায়গায় বিক্ষোভ করেছেন ট্রাম্প সমর্থকরাও তবে, শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই পরিস্থিতির অবসান হবে আশা সাধারণ মার্কিনীদের।
পোর্টল্যান্ডে প্রতিটি ভোট গণনার দাবিতে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ সহিংস হয়ে উঠলে ন্যাশনাল গার্ড সক্রিয় হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বিক্ষোভ থেকে কিছু মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে সিটি সেন্টারে কিছু দোকানের জানালা ভাঙচুর করেছে। একে দাঙ্গা বলে উল্লেখ করেছে পুলিশ।
এদিকে, মিনিয়াপোলিসে দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী রাস্তা দখল করলে সেখান থেকে কয়েক জনকে আটক করেছে পুলিশ। মার্কিন গণমাধ্যমগুলো বলছে, বিক্ষোভকারীরা ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার ভোট বন্ধের আহ্বানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিলেন।
ডেট্রয়েটে, ট্রাম্প সমর্থকরা ভোট গণনা কেন্দ্রের বাইরে জড়ো হয়ে ‘ভোট গণনা বন্ধ করো’ বলে স্লোগান দিতে থাকে। সেসময় আশেপাশের স্থাপন ভাঙচুর করে তারা।
Leave a reply