অপমানের বিচার না পেলে বিষ খাওয়ার ঘোষণা দুই মুক্তিযোদ্ধার

|

নিজস্ব প্রতিনিধি:

বুক থেকে মুক্তিযোদ্ধা মনোগ্রাম খুলে ফেলার আদেশ ও অপমান করার প্রতিবাদে ‘অপমানকারী পুলিশের বিরুদ্ধে উপযুক্ত বিচার না পেলে বিষ খাব’ ঘোষণা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দুই মুক্তিযোদ্ধা।

সোমবার (২৩ নভেম্বর) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন খাজরা ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা দীনেশ চন্দ্র মন্ডল (গেজেট নং ২০৪৩) ও আফসার আলী গাজী।

লিখিত বক্তব্যে দীনেশ মন্ডল বলেন- রবিবার (২২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আমি আমার ডায়াং মোটরসাইকেল যোগে আশাশুনি আসার সময় এসআই জুয়েল আমার গাড়ী থামাতে বললে আমি গাড়ী থামিয়ে দাড়িয়ে পড়ি। পরে সোহাগ নামে এক কনস্টেবল আমাকে গাড়ী নিয়ে রাস্তার পাশে যেতে বলে। আমি বলি কাকা কি হয়েছে? শুনে সোহাগ বলে গাড়ী রাস্তার পাশে আনো। এই (..) লাইট লাগাইছো কেনো? তখন আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং পুলিশের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলে নিজের পরিচয় দিয়ে তাকে ভদ্রভাবে কথা বলতে বলি। আমার ছেলে পুলিশে চাকরী করে বলেও জানাই। তখন সে গালি দিয়ে বলে ঐ (…) পরিচয় বাদ দে। বুকের মধ্যে মনোগ্রাম লাগানো দেখে গালি দিয়ে বলে (…) লাগাইছো কেনো? ওসব খুলে ফেলো। এরপর সে প্লাস দিয়ে গাড়ীর লাইটটা কেটে নেয়। পরে হর্ন কাটতে গেলে আমি নিষেধ করি। সে বলে দুটি হর্ন রাখা যাবে না। আমি বাঁধা দিয়ে বলি কোম্পানি লাগিয়েছে আপনি কাটবেন কেনো? আমি কিন্তু এসপি সাহেবের কাছে নালিশ করব। সে তখন বহু লোকজনের সামনে প্যান্টের চেইন খুলে অশ্লীল গালি দিয়ে ওঠে। আমার আগে আফসার আলী নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথেও এই পুলিশ সদস্য একই রকম ব্যবহার করে অপমানিত করেছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি পুলিশের এই আচরণে আমিসহ আমার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার চরম অপমানিত বোধ করছি। তাই সরজমিনে তদন্ত পূর্বক যদি এর সঠিক বিচার না পাই তবে আমি সবার সামনে বিষপানে আত্মহত্যা করব।

বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- বিষয়টি আমি আমাদের ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। আমাকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করা হবে।

এএসপি (দেবহাটা সার্কেল) ইয়াছিন আলী ও ছুটিতে থাকা আশাশুনি থানা অফিসার ইনচার্জ গোলাম কবির সঠিক বিচার করবেন বলে ফোনে জানিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে থানার দায়িত্বে থাকা ওসি তদন্ত মাহফুজুর রহমান সব জানার পরও একবারও খবর নেননি বা ফোন করেননি।
সংবাদ সম্মেলনে বিষের বোতল নিয়ে চরম অপমানিত এ বীর মুক্তিযোদ্ধা সঠিক বিচার না পেলে আত্মহত্যা করবেন বলে অঝোরে কেঁদে ফেলেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply