করোনার ভ্যাকসিন নেয়ার পর দেশের প্রথম চিকিৎসক দম্পতি যা জানালেন

দেশের প্রথম দম্পতি হিসেবে করোনার ভ্যাকসিন নিলেন তারা। সেটি আরও ভিন্ন মাত্রা যোগ করে যখন জানবেন এই দম্পতির দুইজনই দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসক। বলা হচ্ছে অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান ও তার স্ত্রী সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানিজ ফাতেমার কথা। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল দশটার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকাদান কেন্দ্রে এই চিকিৎসক দম্পতি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আসা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। তারা দু’জনই সুস্থ আছেন। ফুরফুরে মেজাজে কথা বললেন যমুনা নিউজের সাথে।

ডা. মোস্তফা জামান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)’র কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক। তার স্ত্রী ডা. কানিজ ফাতেমা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

অধ্যাপক ডা. মোস্তফা জামান জানালেন, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর তারা দুু’জনেই বেশ ভালো আছেন। হাতে সামান্য ব্যাথা ছাড়া তেমন কোনো অসুবিধা বোধ করছেন না।

তিনি বলেন, আমার মা বারবার কল করে খোঁজ নিচ্ছেন। ভালো আছি কিনা। প্রথম দম্পতি হিসেবে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমরা আসলে একটা মেসেজ দিতে চেয়েছি, সেটা হলো ভয়, কুসংস্কারকে পেছনে ফেলে বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তা করা।

বিএসএমএমইউ’র সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানিজ ফাতেমা বলেন, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর আমাদের তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা সবাই যেহেতু নানা ধরনের ভ্যাকসিনের সাথে অভ্যস্ত, সেসব ক্ষেত্রে যেমন প্রতিক্রিয়া থাকে এ ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি কিছু নয়। আমাকে অনেকেই ভ্যাকসিন নিতে নিরুৎসাহিত করেছিল। তাদের মনে এক ধরনের ভীতি দেখেছি। কিন্তু আমরা বিজ্ঞানের মানুষ, বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তা করা উচিত, ভয় পেলে চলবে না।

ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে মোটেও উদ্বিগ্ন নয় উল্লেখ করে ডা. কানিজ জানান, আমরা ইতিবাচক চিন্তা করছি। সবাইকে আহ্বান জানাবো ভয়কে জয় করে এগিয়ে আসুন।

ড. মোস্তফা জামান যোগ করলেন, আমি যখন সকালে ভ্যাকসিন নিতে যাচ্ছিলাম আমার একজন সহকারী বললেন, তার এলাকায় গুজব রটেছে ভ্যাকসিন নিলে নারীরা পুরুষ বা পুরুষরা নারী হয়ে যায়। কিছু ডাক্তারও আমাকে বলেছেন যে আমরা দু’জনই একসাথে ভ্যাকসিন নিলে পরিবারের অন্যান্যদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। অর্থাৎ একটি ভুল ধারণা সবার মাঝেই আছে। পৃথিবীর যেখানে যেখানে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে বেশিরভাগ খবর কিন্তু ভালো পাচ্ছি। ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম সফল করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে আমরা এর সুফলটা পাবো।

এর আগে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া করোনার ভ্যাকসিন নেওয়ার মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন।