দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের চতুর্থ দিন শেষে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ৭ উইকেট আর উইন্ডিজের প্রয়োজন ২৮৫ রান। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুলের ব্যাট থেকে এসেছে ১১৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। লিটন খেলেছেন ৫৯ রানের ইনিংস। এরপর অল্প রানে মিরাজ ও তাইজুল আউট হলে ২২৩ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের ১৭১ রানের সাথে চতুর্থ দিনের ২২৩ যোগ হয়ে উইন্ডিজের সামনে জয়ের টার্গেট দাঁড়ায় ৩৯৫ রান।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেলের ৩৯ রানের জুটি গড়ে শুরুটা ভালোই করেছিলো উইন্ডিজ। তবে আগের ইনিংসে চার উইকেট নেয়া মিরাজ বোলিংয়ে এসেই ব্রেকথ্রু এনে দেন দলকে। ৫০ বলে ২৩ রান করা ক্যাম্পবেলকে ফেলেন এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে। সাথে সাথেই অধিনায়ক বদলে ফেলেন পরিকল্পনা।
এবার ফিল্ডিং সাজান আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে। সেই আক্রমণে পতন ঘটে ব্রাথওয়েটের। মিরাজের বলে ব্রাথওয়েটকে সিলি পয়েন্টে আটকা পড়েন ইয়াসির আলির জালে। ৪৮ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে যখন ধুকছিল উইন্ডিজ ঠিক তখনই আবারও মিরাজের আঘাতে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন শেইন মোসলে।
আর কোনো বিপদ ছাড়াই দিন শেষ করেন কাইল মেয়ার্স ও এনক্রুমাহ বনার। বনার ১৫ ও মেয়ার্স ৩৭ রানে অপরাজিত আছেন। তাদের জুটি অবিচ্ছিন্ন ৫১ রানের। জয়ের জন্য উইন্ডিজের প্রয়োজন এখনও ২৮৫ রান।
এর আগে, চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের শুরুতেই মুশফিককে হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর লিটনকে সাথে নিয়ে টাইগারদের রানের চাকা সচল রাখে মুমিনুল হক। ক্যারিবিয়ান স্পিনারদের সামলাতে যখন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা হিমশিম খেয়েছে তখন ক্যাপ্টেনই নিজের ঘাড়ে দায়িত্ব তুলে নিয়ে খেলেন অসাধারণ একটি ইনিংস। দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ১০টি সেঞ্চুরির মালিক হন কক্সবাজারের এই তারকা।
১০০ রানের ইনিংসটি খেলতে মুমিনুল খেলেছেন ১৭৩ বল। আর হাঁকিয়েছেন ৯টি বাউন্ডারি। গ্যাবরিয়ালের বলে তিনি আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ১১৫ রানে। এই ইনিংস খেলতে তাকে ক্রিজে মোকাবেলা করতে হয়েছিলো ১৮২ বল। আর বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন ১০টি।
ক্যাপ্টেনের বিদায়ের পর বিদায় নেন লিটন কুমার দাস। ওয়ারিক্যানের বলে লিটন বিদায় নেন ৫৯ রানে। এরপর আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মেহেদী মিরাজের সাথে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন তাইজুল ইসলাম।
তবে মিরাজ ও তাইজুল ওয়ারিক্যানের শিকারে পরিণত হলে ইনিংস ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ৮ উইকেটে দলীয় ২২৩ রানে ইনিংস ঘোষণা করে টাইগাররা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৪৩০ রান। উইন্ডিজ করেছিল ২৫৯ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
টস: বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ৪৩০/৭ (১ম ইনিংস)
মিরাজ ১০৩, সাকিব ৬৮, সাদমান ৫৯, লিটন ৩৮, মুশফিক ৩৮, মুমিনুল ২৬, শান্ত ২৫, নাঈম ২৪, তামিম ৯
বোলিং: ওয়ারিকান ৪/১৩৩, কর্নওয়াল ২/১১৪, বনার ১/১৬, রোচ ১/৬০, গ্যাব্রিয়েল ১/৬৯।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৫৯/১০ (৯৬.১ ওভার)
ব্রাথওয়েট ৭৬, ব্ল্যাকউড ৬৮, জসুয়া ৪২, মেয়ার্স ৪০, বনার ১৭, জসুয়া ১২*;
মিরাজ ৪/৫৮, মুস্তাফিজ ২/৪৬, নাঈম ২/৫৪, তাইজুল ২/৮৪।
বাংলাদেশ ২২৩/৮ (৬৭.৫ ওভার- ইনিংস ঘোষণা)
মুমিনুল ১১৫, লিটন ৬৯, মুশফিক ১৮, সাদমান ৫, তামিম ০, শান্ত ০ মিরাজ ৭, তাইজুল ৩
ওয়ারিকান ৩/৫৭, কর্নওয়াল ৩/৮১, গ্যাব্রিয়েল ২/৩৭।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১১০/৩ ( ৪০ ওভার)
মেয়ার্স ৩৭*, বনার ১৫*, ক্যাম্পবেল ২৩, ব্রাথওয়েট ২০;
মিরাজ ৩/৫২।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য ৩৯৫ রান।
Leave a reply