“বন্ধুত্ব আরও গভীর” করার বার্তা নিয়ে কাল দু’দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সফরে এ দেশের মানুষের মনের অনাস্থা-অবিশ্বাস দূর করতে মোদি উদ্যোগ নেবেন বলে আশা ভারতীয় বিশ্লেষকদের। যোগাযোগ আর ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধিতেই ভারত প্রাধান্য দিচ্ছে বলে মনে করেন তারা। বলছেন, বাংলাদেশকে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই।
ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে গেছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দশ-দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। আয়োজনের শেষ দিনে ঢাকা পা রাখবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কোভিডকালে এটিই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর। দিল্লীর বিশ্লেষকরা বলছেন, দু’দেশে রাজনৈতিক পালাবদল হলেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ফাটল ধরেনি। সেই সম্পর্ক আরও শক্ত করতে চায় ভারত।
অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক জয়িতা ভট্টাচার্য বলেন, প্রতিকূলতা সঙ্গে নিয়ে আমরা একসাথে কীভাবে এগিয়ে যেতে পারি তারই একটা দৃষ্টান্ত স্থাপনের চেষ্টাই এই সফর।
ভারতের জতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি গৌতম লাহিড়ীর মতে, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কটা পরিবারে সদস্যদের সাথে যেমন সম্পর্ক থাকে অর্থাৎ রক্তের সম্পর্কের মতো। এই দুই দেশের সম্পর্ক অন্য কোনো দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মতো নয়। এই সম্পর্কটা অত্যন্ত বিশেষ।
সফরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ছাড়াও কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন দুই শীর্ষ নেতা। সই হবে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক।
ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার দেব মুখার্জি এই বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মনে যদি কোন শঙ্কা ও দ্বিধা থাকে তাহলে এই সফরে সেগুলো নিরসনে সব চেষ্টা ভারত সরকারের করা উচিত।
ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে ইনভেস্ট করার জন্য খুব বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে উল্লেখ করে জয়িতা ভট্টাচার্য বলেন, তাই এই সফরে এসব বিষয় নিয়েও পদক্ষেপ নিবে দুই দেশের সরকার। আর গৌতম লাহিড়ীর কথা, দুই দেশের জনগণ যদি মিলিত না হয় তাহলে কিন্তু দুদেশের কূটনৈতিক নেতায় নেতায় মিলিত হয়ে কিছু করা যাবে না।
ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে সন্ত্রাস দমনে ঢাকা সর্বাত্মক সহায়তা করেছে জানিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ সমৃদ্ধ আর স্থিতিশীল হলে তার সুফল পায় নয়াদিল্লী।
এই বিষয়ে দেব মুখার্জি যমুনা নিউজকে বলেন, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কারণে যে সব বিবৃতি দেওয়া হয় সেগুলো প্রতিবেশী দেশগুলোর রিয়াকশনের কথা মাথায় রেকে একটু সাবধানে দেওয়া উচিত। জয়িতা ভট্টাচার্য, ভারত ও বাংলাদেশকে একটি ব্লক হিসেবে কাজ করতে হবে। আর গৌতম লাহিড়ী জানালেন, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ, নিরাপদ ও স্থায়ী বাংলাদেশ ভারতের জন্য খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ভারত কখনোই বাংলাদেশকে উপেক্ষা করতে পারবে না।
সফরে টুঙ্গি-পাড়ায় জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া গোপালগঞ্জ ও সাতক্ষীরায় গিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের সাথেও সাক্ষাৎ করবেন।
Leave a reply