রাজধানীর বনানী কবরস্থানেই শেষ ঠিকানা হলো বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর। শনিবার বাদ জোহর তার দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২.২০ মিনিটে মারা যান এ মহাতারকা ও রাজনীতিক।
হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ জানান, কবরীকে ৮ তারিখে ভর্তি করা হয়। মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু গতকাল দুপুরের পর অবস্থার অবনতি হয়। কুর্মিটোলার সিটি স্ক্যানে ফুসফুসের ৬৪ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছিল। পরে তার দুটি ফুসফুস শতভাগ আক্রান্ত হলে লাইফ সাপোর্টে থাকাকালীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
করবীর আবির্ভাবে বাংলা সিনেমায় নিঃশব্দে ঘটে যায় এক অনন্য বিপ্লব। গ্রাম বাংলার নারী চরিত্রের যেন প্রতিমা হয়ে ওঠেন নায়িকা কবরী। ১৯৬৪ সালে সুতরাং সিনেমা দিয়ে শুরু, এরপর টানা গড়েছেন একের পর এক ব্যবসা সফল ও তুমুল জনপ্রিয় সিনেমার সব রেকর্ড। নায়ক রাজ রাজ্জাকের সাথে জুটি বেঁধে আবির্ভাব, বাঁশরি, যে আগুনে পুড়ি, দ্বীপ নেভে নাই, দর্প চূর্ণ, আগুন্তকসহ ১৯ টি সিনেমা। তখন বাংলাদেশে রাজ্জাক-কবরী মানেই সুপারহিট সিনেমা।
চেহারায় অপার মমতা আর মায়াবী চাহনীর কবরী ছিলেন প্রচণ্ড সাহসী। ১৯৭১ সালে বাংলার মুক্তি সংগ্রামে কবরীও যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। যে সাহসের গল্প তিনি বলেছেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত।
নায়িকা কবরীর সাথে জুটি বেঁধেছিলেন নায়ক ফারুক, বুলবুল আহমেদ, উজ্জ্বল, সোহেল রানা, জাফর ইকবাল, খলিল, খান আতা, আলমগীরসহ বাংলা সিনেমার সমসাময়িক প্রায় সকল লিজেন্ড নায়করা। গানে গানে মন মাতানো সব সিনেমায় দর্শকের প্রথম পছন্দ ছিলেন নায়িকা করবী। যেন দেশের প্রতিটি নারীই নিজেকে খুঁজে পেতেন কবরীর অভিনয়ে।
১৫০ টিরও বেশি ছবিতে অভিনয়, প্রযোজনার পাশাপাশি পরিচালনা, সিনেমা জগতের কোথাও পা রাখতে ভোলেননি অনন্য প্রতিভার আধার কবরী। গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে অংশ নেন জাতীয় নির্বাচনে, নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য। তবে রুপালি পর্দার করবীকে সব সময় অনন্য হিসেবেই মনে রাখবে বাংলাদেশ।
Leave a reply