ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘করোনা প্রতিরোধ করো, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রত্যাহার করো’ এই স্লোগানে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আটকে রেখে হেনস্থা, মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে ও তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ, স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়া ও অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য অনুবিভাগ) কাজী জেবুন্নেছা বেগমের অপসারণ দাবি করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব আয়োজিত মানববন্ধন, বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সমাবেশে প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পিযুষ কান্তি আচার্য, জেলা টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মঞ্জুরুল আলম, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আরজু, দৈনিক সমকালের নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুন নূর ও সংগঠনের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহভাপতি আলামিন শাহীন।
সঞ্চালনা করেন বাচিক শিল্পী ও সাংবাদিক মনির হোসেন। মানববন্ধন, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সমাবেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রেসক্লাবের সদস্যবৃন্দ, জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী, সরাইল প্রেসক্লাবের সদস্যবৃন্দ ও প্রথম আলোর ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার সদস্যরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ রোজিনা ইসলাম। তিনি করোনার এই মহামারির সময়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সকল অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা নিয়ে একাধিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছেন। রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়েও প্রতিবেদন করেছেন। এতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লোকজনের ব্যক্তিগত অনেক ক্ষতি হয়েছে। সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে রোজিনা ইসলামকে মানসিক, শারীরিক নির্যাতন ও হেনস্থা করেছেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এক অতিরিক্ত সচিব কিসের বলে রোজিনা ইসলামের মতো এক অনুসন্ধানী সাংবাদিককে গলা চেপে ধরেছে। তিনি ও তাকে যারা মদদ দিয়েছেন, তারা রোজিনা ইসলামের নয়, বাংলাদেশের সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছেন।
বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা মানববন্ধনে করোনা প্রতিরোধ করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রত্যাহার করার দাবি জানান। তারা জানান, স্বাস্থ্য বিভাগ এখন লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়া ও সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে গলা চেপে ধরা অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগমকেও দ্রুত অপসারণের দাবি জানান। তা না হলে রুগ্ন স্বাস্থ্য বিভাগের কারণে বাংলাদেশ করোনা থেকে মুক্ত হতে পারবে না। তাদের অপসারণ না হলে বাংলাদেশে করোনা রোধ সম্ভব নয়। বক্তারা অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছার সম্পদের পাহাড় গড়ার বিষয়ে মানববন্ধনে প্রশ্ন তোলেন।
Leave a reply