বসবাসের যোগ্য শহর হিসেবে ঢাকার অবস্থান কোথায়? এ নিয়ে মানুষের মাঝে মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু তিলোত্তমা নগরী যে বহু আগেই তার জৌলুস হারিয়েছে, তা এক বাক্যে স্বীকার করবে সবাই। নগরবিদদের অভিযোগ, সরকার আর নাগরিকরা মিলেই প্রাণশক্তি নষ্ট করছে ঢাকার। তাই পরিস্থিতির উত্তরণে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহবান জানিয়েছেন তারা।
বিশ্বের জনবহুল মেগাসিটি হলো ঢাকা। প্রায় দুই কোটি বাসিন্দার মহানগরী। প্রতিদিনই জীবন ও জীবিকার খোঁজে মানুষ ছুটে আসে এখানে। যুক্ত হন নতুন নতুন বাসিন্দা। ধনী গরীবের এই শহরে সংকট সীমাহীন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও সমাধান মেলেনি সেসব সংকটের।
নগরের মানুষের এক অংশ এর জন্য সরকারের সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবকে দায়ী করছেন। তাদের মত, সরকারে যেই আসুক না কেন তারা যেসব প্রজেক্ট গ্রহণ করে সেসবের অধিকাংশই পরিবেশ বিরোধী। তাই অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা শহরে আর যাই হোক, মানুষ বসবাস করতে পারবে, সেই ভরসা নেই অনেক বাসিন্দারই।
ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বৈশ্বিক জরিপে বসবাসযোগ্য ১৪০টি শহরের মধ্যে তিন বছরে দুই ধাপ এগিয়ে ঢাকার স্থান এখন ১৩৭-তম। মানে শেষের দিক থেকে চার নম্বরে। দাবদাহে এ বছর ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড গড়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে যায় এই মহানগরী। বিশ্বে ঢাকার অবস্থান তলানিতে থাকার দায় কার?
বাসিন্দাদের অভিমত, এর জন্য দায়ী আসলে সকলেই। জলাবদ্ধতার মতো তীব্র সংকট নিরসনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সাথে সকল স্তরের মানুষের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন তারা।
আন্তর্জাতিক জরিপ নিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদদের কিছুটা আপত্তি আছে। তবে পরিকল্পিত নগরায়ন বাস্তবায়নের দুঃখ সবার মধ্যেই।
নগর পরিকল্পনাবিদ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ৫৪ টি সেবা সংস্থা সমন্বয়হীনতার অভাবে, জবাবদিহিতার অভাবে আমাদের জনদুর্ভোগ মোকাবেলা করতে পারছে না।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারি অফিসগুলোতে যে পরিমাণ সমন্বয়হীনতার কথা বলা হয় ততোটা সমন্বয়হীনতা আমি দেখি না।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবৈধভাবে জায়গা ও খাল দখল করে সেখানে বিল্ডিং নির্মাণ করছে যারা, আবর্জনা ব্যবস্থাপনাকে আরো দুর্বল করার চেষ্টা করছে যারা, তাদের বিরুদ্ধে কাজ চলছে।
নীতিনির্ধারকেরা বলছেন, এখনো সুযোগ আছে পরিকল্পিত ঢাকাকে সাজানোর। সেজন্য বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগের সাথে দরকার নাগরিকদের সহযোগিতা।
ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন:
Leave a reply