আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ। এই দিনে প্রিয় ঋতু বর্ষার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। যদিও কয়েক দিন আগে থেকেই ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে দেশে। আজও সকাল থেকে রাজধানীতে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে।
আষাঢ় বাংলা সনের তৃতীয় মাস। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে জুন-জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে আষাঢ় মাস। আষাঢ় নামটি এসেছে পূর্বাষাঢ়া ও উত্তরাষাঢ়া নক্ষত্রে সূর্যের অবস্থান থেকে। এ মাসে বৃষ্টি হয় অনেক। গ্রীষ্মের দাবদাহ শেষে আষাঢ়ে বৃষ্টির ছোঁয়ায় বাংলার প্রকৃতি যেন ফিরে পায় প্রাণ। নতুন আনন্দে জেগে উঠে প্রকৃতি। গ্রীষ্মের রুদ্র প্রকৃতির গ্লানি আর জরাকে ধুয়ে মুছে প্রশান্তি স্নিগ্ধতা আর সবুজে ভরে তোলে বর্ষা।
বাঙালি মননে সবচেয়ে বেশি রোমান্টিকতা-আধ্যাত্মিকতার সুর বেজেছে এই বর্ষায়। বর্ষায় আবেগ ও অনুভূতির জোয়ারে ভাসেননি এমন কবি, সাহিত্যিক পাওয়া যায় না। শুধু যে কবি-সাহিত্যিক, তা নয়-সাধারণ মানুষও। কালীদাস থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাশ বা নির্মলেন্দু গুণ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে হুমায়ূন আহমেদ- কেউ বর্ষাকে এড়িয়ে যেতে পারেননি।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘আষাঢ় কবিতায় বলেছেন, ‘বাদলের ধারা ঝরে ঝরঝর, আউশের ক্ষেত জলে ভরভর, কালি-মাখা মেঘে ও পারে আঁধার ঘনিছে দেখ্ চাহি রে। ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।’
জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের কাছে বর্ষাকে মনে হয়েছে ‘বাদলের পরী’। তিনি লিখেছেন- রিমঝিম রিমঝিম ঘন দেয়া বরষে/কাজরি নাচিয়া চল, পুর-নারী হরষে…।’
বর্ষা আমাদের জন্য অপরিহার্য এক ঋতু। বৃষ্টি না হলে শস্যাদি জন্মাবে না, বেড়ে উঠবে না প্রাণ। বৃষ্টির অভাবে মাটি যখন অনুর্বর হয়ে যায়, তখন বর্ষা এসে তা উর্বর করে। আমাদের নদী, মাঠ, ঘাটের দেশ বর্ষায় ভরে ওঠে সবুজে শ্যামলে। বর্ষায় ফোটে কদম ফুল, যা বর্ষার রূপকে বাড়িয়ে দেয়।
এনএনআর/
Leave a reply