বিরূপ আবহাওয়ার প্রভাব পড়ছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। বন্যায় বিপর্যস্ত নেপাল, ভুটান, মেক্সিকো, ক্রাইমিয়া। বন্যার প্রভাবে নেপালে নিখোঁজের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। একই সময় দাবদাহের কবলে ইউরোপ-আমেরিকার অনেক অঞ্চল। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যে দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড খরা। দাবানল ছড়িয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ায় বেশ কয়েকটি স্থানে।
নেপালে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ মেলামচি শহর এখন তলিয়ে আছে বন্যার পানি আর কাদামাটিতে। নদীর পানি বেড়ে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে তিব্বত সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম। একই পরিস্থিতি হিমালয় সংলগ্ন সিন্ধুপালচক জেলায়। ক্ষতিগ্রস্ত ২ শতাধিক বাড়িঘর। স্কুলসহ উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে হাজারও মানুষ।
স্থানীয়রা বলছের, ঘরের ভেতর কোমর সমান পানি। সব জিনিসপত্র কাদামাটিতে নষ্ট হয়ে গেছে। কোথায় যাবেন, কিভাবে চলবেন কিছুই জানেন না তারা। সামনের দিনগুলোতে খাবার কোথা থেকে জুটবে তাও অনিশ্চিত অনেকের।
নেপালে সারাবছরের মোট বৃষ্টিপাতের ৮০ শতাংশই হয় বরষা মৌসুমে। এবার শুরু থেকেই অতিরিক্ত বৃষ্টিতে আশঙ্কায় প্রশাসন। বড় বড় নদীর পানিও বইছে বিপদসীমার ওপরে। সতর্কতা জারি করা হয়েছে নারায়ণী নদীর আশপাশের এলাকাগুলোতে।
অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানগুলোতে ভারি বৃষ্টির কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবার। এছাড়াও সম্প্রতি ভূমিধস একটা বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেশী দেশ ভুটানও বিপর্যস্ত বন্যায়। রাজধানী থিম্পুর ৬০ কিলোমিটার দূরের একটি পাহাড়ি ক্যাম্প ভেসে গিয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বের আরেক প্রান্ত মেক্সিকোতেও বন্যার হানা। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ওয়াক্সাকায় তলিয়ে গেছে এক হাজারের মতো বাড়িঘর। রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ক্রাইমিয়াও পড়েছে বন্যার কবলে। কেরচ শহরে স্থানীয়ভাবে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা।
কিছু দেশ যখন বৃষ্টি-বন্যায় নাজেহাল, তখন দাবদাহে পুড়ছে ইউরোপ-আমেরিকার অনেক জায়গা। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জার্মানি ও ফ্রান্সের বাসিন্দারা। প্যারিসে এরইমধ্যে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে তাপমাত্রা। দাবদাহের সবচেয়ে বড় শিকার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া। অঙ্গরাজ্যটির পশ্চিম আর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিপর্যস্ত জনজীবন। বরাবরের মতোই সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি ডেথভ্যালিতে। যেখানে ৫৪ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে তাপমাত্রা। প্রচণ্ড দাবদাহে শুরু হয়েছে পানিশূন্যতাজনিত সমস্যা।
গরমের প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে দেখা দিয়েছে তীব্র খরা। হুমকির মুখে ক্যালিফোর্নিয়া, নেভাদা, ইউটাহ, অ্যারিজোনার ৭২ শতাংশ জমির ফসল।
পাশাপাশি রয়েছে দাবানল। ক্যালিফোর্নিয়ার অন্তত ১০ হাজার জায়গায় পুড়ছে বনভূমি। এরই মধ্যে ছাই হয়েছে প্রায় অর্ধশত লাখ একর এলাকা।
Leave a reply