করোনা মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোর উদ্যোগ এরইমধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে গ্রামের মানুষের কাছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে দেশের ৪১টি এনজিওর করোনা প্রতিরোধে ‘সামাজিক দুর্গ কর্মসূচি’ প্রত্যন্ত জনপদে এখন মহামারি প্রতিরোধে অন্যতম সহায়ক। দেশের ৩৫টি সীমান্তবর্তী জেলায় এই কর্মসূচির সেবা নিশ্চিত করছে ব্র্যাকসহ ৫টি বেসরকারি সংস্থা।
ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ভয়াল থাবায় যখন দেশের মানুষ বিপর্যস্ত, তখন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ‘করোনা প্রতিরোধে, সামাজিক দুর্গ কর্মসূচি’ হাতে নেওয়া হয়। করোনা প্রতিরোধ, সচেতনতা বৃদ্ধি, শনাক্তকরণ ও ভ্যাকসিন গ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণ এই চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে একই প্লাটফর্মে আনা হয় দেশের ৪১টি এনজিওকে। যার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে ব্র্যাকসহ ৫টি বেসরকারি সংস্থা।
ব্র্যাকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচীর পরিচালক ডা: মোর্শেদা চৌধুরী বলেন, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমরা একটি কর্মসূচি হাতে নেই। যার নাম হচ্ছে ‘করোনা প্রতিরোধে, সামাজিক দুর্গ কর্মসূচি’। এই কর্মসূচির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আছে পাঁচটি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, এসকেএস ফাউন্ডেশন, দুঃস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ওয়াটার এইড বাংলাদেশ এবং ব্র্যাক।
কর্মসূচির খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সিলেট সদরের দলইপাড়া গ্রামের সুমিতা ভৌমিক তিন দিন ধরে জ্বরে ভূগছিলেন। কর্মসূচির আওতায় ব্র্যাকের গ্রামভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবিকা মায়ারুন বেগম তার অসুস্থতার তথ্যটি পৌঁছে দেন স্বাস্থ্যকর্মী লাকী রানীর কাছে। খবর পেয়েই সুমিতাকে সেবা দিতে ছুটে যান, লাকী। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সুমিতাকে দেওয়া হয় চিকিৎসাপত্রও।
গ্রামের মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কেও ধারণা দিচ্ছেন মাঠকর্মীরা। হটস্পট নির্ধারণ করে, সেখানেও চলছে সচেতন করার কাজ।
এলাকাবাসীরা জানান, করোনা মহামারির এই সময়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যবিধি মানানোর ক্ষেত্রে এনজিওগুলো ভূমিকা রাখছে। তারা মাস্ক ব্যবহারের জন্য উদ্বুদ্ধ করছে ও মাস্ক বিতরণ করছে, নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবাও দিচ্ছে।
করোনা মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি সিলেট বিভাগের দুটি জেলায় কাজ করছে ব্র্যাকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচীর দুই হাজারেরও বেশি কর্মী।
ব্র্যাকের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক রিপন চন্দ্র মন্ডল বলেন, আমরা স্থানীয় প্রশাসন যারা আছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা যারা আছেন তাদের সাথে মিলেই একত্রে পরিকল্পনা করে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করছি।
বেসরকারী সংস্থাগুলোর কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সরকারী কর্মকর্তারাও।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ইউএনও মোহাম্মদ গোলাম কবির বলেন, ব্র্যক যে সচেতনামূলক কার্যক্রমগুলো করছে সেগুলোর আমাদের সমাজে অনেক প্রয়োজন আছে। করোনার মহামারির এই সময়ে তার মাস্ক বিতরণ করছে, মাইকিং করছে, মানুষকে সচেতন করছে, যা এখন খুবই প্রয়োজন।
Leave a reply