আফগানিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ তিন প্রদেশ- কান্দাহার, হেরাত ও লস্কর গাহ’র দখল নিয়ে চলছে তুমুল সংঘর্ষ। তালেবান যোদ্ধাদের হামলায় ইতোমধ্যেই অকেজো হয়ে গেছে কান্দাহার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তাই গোলাবর্ষণের তীব্রতা বাড়িয়ে তালেবানদের রোখার চেষ্টা করছে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী।
কান্দাহারের মূল বিমানবন্দরে গতকাল রোববার (১ আগস্ট) চালানো হয় তিন দফা রকেট হামলা। তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের দাবির পরই, রানওয়ে এবং হেলিকপ্টার অবতরণস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা নিশ্চিত করে সরকার। চলছে বিমানবন্দরের সংস্কার কাজ, বন্ধ সকল ফ্লাইট।
তালেবানের অগ্রযাত্রা রুখতে গোলাবর্ষণ বাড়িয়েছে আফগান সরকারি বাহিনীও। পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশে সম্মুখযুদ্ধে লড়ছেন কয়েক প্লাটুন কমাণ্ডো।
দেশটির দক্ষিণের শহর লস্কর গাহ’তেও বাড়ানো হয়েছে সেনা সংখ্যা। স্থানীয়দের দেয়া তথ্য অনুসারে, লড়াইয়ে প্রাণ গেছে অন্তত কয়েকশ বেসামরিক মানুষের। যদিও বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করেনি আফগান কর্তৃপক্ষ।
আফগানিস্তান সেনা মুখপাত্র জেনারেল আজমল ওমর সিনওয়ারি জানিয়েছেন, এই তিনটি প্রদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খুবই নাজুক। বিশেষভাবে লস্কর গাহ’তে তালেবানরা বেশ আগ্রাসী। নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি তাদের প্রতিরোধ করার ওপরই প্রথম গুরুত্বারোপ করছে নিরাপত্তা বাহিনী। আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে যাওয়ার পরই, পাল্টা আক্রমণ চালানোর কথা ভাবছি আমরা।
এসব লড়াইয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য হাসপাতাল, চিকিৎসা কেন্দ্র, স্কুলের মতো বেসামরিক স্থাপনাগুলোও। যদিও বিবাদমান কোন পক্ষই স্বীকার করছে না এসব অভিযোগ।
লস্কর গাহ’তে অবস্থিত আরিয়ানা হাসপাতালের মালিক ড. মোহাম্মদ দ্বীন নারেওয়াল বলেন, আফগান বাহিনী বা তালেবান, কোনপক্ষই আমাদের ছাড় দিচ্ছে না। অভিযানের সময় ছয় কর্মকর্তা ছিলেন হাসপাতালে। গোলার বিস্ফোরণে দুজন নার্স ও এক রোগীর আত্মীয় গুরুতর আহত হন। প্রাণ হারিয়েছেন অপর রোগীকে দেখাশোনা করা এক ব্যক্তি। লড়াইরত উভয়পক্ষের কাছেই অনুরোধ, দয়া করে জনগণের সম্পদ ধ্বংস করবেন না।
মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর, গত মে মাস থেকে আফগানিস্তানের এক-তৃতীয়াংশের বেশি এলাকা দখলে নিয়েছে তালেবান। এর বেশিরভাগই সীমান্ত ক্রসিং ও গ্রামাঞ্চল। নিজেদের অবস্থান আরও সংহত করতে এবার শহরাঞ্চলের দিকে হাত বাড়িয়েছে তারা।
/এসএইচ
Leave a reply