কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে দুই পক্ষের সংঘাতের পর থেকে হামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে দুই মাস ধরে এলাকাছাড়া বাহেরনগর গ্রামের শতাধিক মানুষ। গত জুনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য দুই ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে একজন নিহতের পর থেকে চলছে এই অবস্থা।
গ্রামবাসী জানায়, ওই নিহতের ঘটনার পর গ্রাম জুড়ে তাণ্ডব চালায় প্রতিপক্ষ। এই ঘটনায় এক পক্ষের তরফ থেকে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকে মামলা-হামলার ভয়ে গ্রামছাড়া প্রায় শতাধিক মানুষ।
বাহেরনগর গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, হামলায় বাড়িঘর ভেঙে প্রায় মাটিতে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। ঘটনার দুই মাস পার হলেও মাথা গোজার ঠাঁইটুকু ঠিক করতে পারেনি বেশিরভাগ পরিবার। ক্ষতিগ্রস্থ এক পরিবার জানায়, আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে, কিছুই বাকি নেই। এখন বাড়িতেও থাকা যায় না।
জানা যায়, ইউপি নির্বাচন ঘিরে গত জুনে দিলালপুর ইউনিয়নে ভুরি ভোজের আয়োজন করেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য দুই প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া এবং সাবেক চেয়ারম্যান মিজবাহ উদ্দিন। খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন নিয়ে ৭ জুন কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়ায় বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের সমর্থকরা।
সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় পরদিন বর্তমান চেয়ারম্যানসহ দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হয়। ওই দিনই আসামি ও তাদের স্বজনদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। এরপর থেকেই নতুন করে হামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে গ্রামছাড়া শতাধিক মানুষ।
গ্রাম জুড়ে ব্যাপক হামলা ও লুটপাট চালানো হলেও, পুলিশ মামলা না নেয়ায় ক্ষুব্ধ ক্ষতিগ্রস্থরা। তারা বলেন, ঘরের খাট, চেয়ার এগুলো নিয়ে গেছে, কিছু বাকি নেই। আমাদের বাড়িঘর সব লুট করে নিয়ে গেছে। আমরা বাড়িতে থাকতে পারি না, পালিয়ে থাকি তবুও পুলিশ মামলা নিতে
চায় না।
তবে, সম্প্রতি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান বাজিতপুর থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, যারা হত্যা করেছে তাদের ঘরবাড়িতে কিছু হামলা হয়েছে। এর আগে আমরা লিখিত অভিযোগ পাইনি, সম্প্রতি পেয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা তদন্ত করা ব্যবস্থা নেব।
হামলার দিন টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কারের পাশাপাশি গরু-ছাগল এমনকি পুকুরের মাছও লুটে নেয়া হয় বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থদের।
/এস এন
Leave a reply