নেত্রকোণার মদন উপজেলার শিবপাশা গ্রামের ৩০টি পরিবার এক মাস ধরে এলাকাছাড়া। প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে ঘরে ফিরতে পারছে না তারা। বাড়ির সীমানা নিয়ে দুই চাচাতো ভাইয়ের দ্বন্দ্বের জের ধরে সংঘর্ষে একজন নিহত ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে পরিবারগুলো। হামলা-ভাঙচুরের মামলা হলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। যদিও পুলিশ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এলাকায় ফিরতে চাইলে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।
মদন উপজেলার শিবপাশা গ্রামে বাড়ির সীমানা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিলো দুই চাচাতো ভাই কারী মিয়া ও আবুল কালামের মধ্যে। এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ যায় কারি মিয়ার এক সমর্থকের। আবুল কালাম অনুসারীদের অভিযোগ, এ ঘটনায় প্রতিশোধ নিতে দফায় দফায় হামলা-ভাঙচুর চালানো হয় তাদের বাড়িঘরে। হুমকি-ধমকির কারণে এলাকায় ফিরতে পারছেন না তারা।
হামলার ভয়ে এলাকাছাড়া কয়েকজন জানান, আমাদের বাড়িঘর সব ভেঙেচুরে লুটপাট করে নিয়ে গেছে। পালিয়েও থাকতে পারছি না। অন্য গ্রামে পালিয়ে থাকলে সেখানে গিয়েও হুমকি দিয়ে আসছে তারা।
গ্রামের নিরীহ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগও উঠেছে। সচেতন নাগরিকরা বলছেন হাওরাঞ্চলে সামান্য বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিচ্ছে।
নেত্রকোণা সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক তিতাস মিয়া বলেন, হাওরাঞ্চলে বিভিন্ন আধিপত্যবাদী কিছু স্বল্পশিক্ষিত মানুষের প্রাধান্য রয়েছে। যারা সমাজের কর্তৃত্ব তাদের নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিয়েছে। ফলে, যেটি হচ্ছে তারা বিবদমান দুই পক্ষের মাঝে সমস্যা সমাধানের পথ না খুঁজে বরং সমস্যাটি নিজের প্রয়োজনে জিইয়ে রাখছে।
বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে, এখনও গ্রেফতার হয়নি কেউ। ক্ষতিগ্রস্তরা নিরাপত্তা চাইলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পুলিশ সুপারের।
নেত্রকোণার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি বলেন, সার্বক্ষণিক পুলিশ রেখে নিরাপত্তা দেয়ার পরিবেশ সেখানে থাকে না, আর একটি এলাকায় কতদিন আর পুলিশ পাহাড়া দিয়ে রাখা যায়। তাই স্থানীয়ভাবেও আমরা এর সমাধান খুঁজছি। আর নিরাপত্তার ব্যাপারে বলতে চাই কেউ যদি নিজের বাড়িতে যেতে চায়, তবে তিনি যাক তার কোনো সমস্যা হলে আমাদের জানালে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।
এর আগে নেত্রকোণার মদন উপজেলাতেই একটি গ্রামে হত্যাকাণ্ডের জেরে অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়।
/এস এন
Leave a reply