ব্রিটিশদের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা। তবে এবার সেই ব্রিটিশরাই বধ হল আরেক সিরাজের কাছে, যার নাম মোহাম্মদ সিরাজ। দিনদিন যেভাবে উন্নতি করছেন তাতে বলে দেয়াই যায়, ভারতীয় টেস্ট বোলিংয়ের এক্স ফ্যাক্টর এখন মোহাম্মদ সিরাজ।
১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন, ভাগিরথীর তীরে পলাশীর আম্রকাননে রচিত হয়েছিল উপমহাদেশের স্বাধীনতার কবর। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পরাজিত হয়েছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব, নবাব সিরাজউদ্দৌলা। এই পরাজয়ে ভারতবর্ষে ১৯০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের পথ সুগম হয়।
আলীবর্দি খানের নাতি সিরাজউদ্দৌলা ব্রিটিশদের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন আর মোহাম্মদ গাউসের ছেলে সিরাজ ব্রিটিশদের পরাজিত করলেন। এখানে কোনো মীরজাফর ছিল না। এখানে সেনাপতির দায়িত্বে থাকা ভিরাট কোহলি উজ্জীবিত রেখেছিলেন পুরো দলকে। শেষদিনে সেনাপতির ভাণ্ডারে সব থেকে বড় অস্ত্র ছিলেন রুদ্রমূর্তিতে থাকা মোহাম্মদ সিরাজ। চোখে চোখ রেখে দেখিয়েছেন আগ্রাসনের প্রদর্শনী। বিধ্বংসী সিরাজের ৪ উইকেটে আইকনিক লর্ডসের মাটিতে ছারখার ব্রিটিশ সাম্রাজ্য।
ব্রিটিশ দুর্গে হানা দেয়ার শুরুটা নিজের ৮ম ওভারের প্রথম বলে। বাঁহাতি মইন আলিকে করা বলটা লেগ-মিডল স্ট্যাম্প করিডোরে এমন একটা জায়গা এবং লেন্থে পিচ করলো যেখানে ব্যাটসম্যান শট খেলতে বাধ্য। সেখান থেকে বলটাকে করালেন অ্যাওয়ে সুইং, আউটসাইড এজ হয়ে ভিরাটের হাতে ধরা পড়লেন মইন আলি।
পরের বলটা যেন আগের বলেরই অ্যাকশন রিপ্লে, বাঁহাতি স্যাম কারেনকে ফেললেন একই ফাঁদে। স্ট্যাম্পে রাখা বলটা অ্যাওয়ে সুইং করে বেরিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে আউটসাইড এজ হয়ে উইকেটকিপারের গ্লাভসবন্দি হন কারেন।
নিজের সামর্থ্যের উপর ভরসা রাখার পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেটের মাইন্ডগেমেও পারদর্শী হচ্ছেন মোহাম্মদ সিরাজ। উন্নতির ছাপটা তার প্রতি ম্যাচেই স্পষ্ট। রিদমিক বোলিং, পেস বোলারের আগ্রাসন, সুইংয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ, সাথে মাথাটাকেও কাজে লাগানো; টেস্টে ভারতীয় পেস বোলিং লাইনআপে বুমরা, শামি, ইশান্তের সাথে অন্যতম এক্স ফ্যাক্টর এখন মোহাম্মদ সিরাজ।
Leave a reply