তালেবান কর্তৃক রাজধানী কাবুল দখলের ৩য় দিন মাথায় সাদা-কালো হিজাব পরে ক্লাসরুমে ফিরেছে আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের শহর হেরাতের স্কুল শিক্ষার্থীরা।
ঐতিহাসিক সিল্ক রুটের শহর হেরাত আফগানিস্তানের অন্যান্য এলাকাগুলোর থেকে সাংস্কৃতিকভাবে কিছুটা ব্যতিক্রম। কবিতা ও শিল্পের জন্য বিখ্যাত এ শহরে অসংখ্য স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এখন পরিণত হয়েছে দেশটির শিক্ষা নগরীতে।
স্কুলে যোগ দেয়া হেরাতের স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষার্থী জানান, আমরাও অন্যান্য দেশের মতো উন্নতি করতে চাই। এবং আমরা চাই তালেবান আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক। আমরা চাই দেশে শান্তি ফিরে আসুক।
হেরাতের একটি গার্লস স্কুলের অধ্যক্ষ বসিরা বসিরতখা বলেন, আমি মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ যে আমরা আবারও স্কুল চালু করতে পেরেছি। হিজাব মেনেই আমাদের ছাত্রীরা ক্লাসে উপস্থিত হচ্ছে।
নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর নারীদের শিক্ষা ও চাকরি করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তালেবান। তবে এবার ক্ষমতা এসে তালেবান তাদের নীতিতে নারীদের জন্য কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ক্ষমতা দখলের পর কাবুলে তালেবানের প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তাদের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, তালেবান ইসলামের নীতি অনুযায়ী নারীদের কাজ করতে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিশ বছর আগে ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনীর আক্রমণে উৎখাত হওয়া তালেবান এবং আজকের তালেবানের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করে জাবিহুল্লাহ বলেন, আদর্শ এবং বিশ্বাসের কোন পার্থক্য না থাকলেও অভিজ্ঞতা, পরিপক্বতা এবং অন্তর্দৃষ্টির ক্ষেত্রে সন্দেহাতীতভাবে অনেক পার্থক্য আছে।
চলতি সপ্তাহে স্কাই নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আরেক তালেবান মুখপাত্র সুহাইল শাহীন আশ্বাস দিয়েছেন, আফগান নারীরা প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন। তালেবান কর্তৃক দখলকৃত এলাকাসমূহে অনেক স্কুল এখনও চালু আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে তালেবান প্রশাসনের শিক্ষানীতি কেমন হবে তা নিয়ে তালেবান মুখপাত্র এখনও কিছুই স্পষ্ট করেননি।
এদিকে, তালেবানরা প্রকাশ্যে তাদের চরমপন্থা থেকে কিছুটা সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) গভীর রাতে তালেবান মুখপাত্র যুদ্ধে তাদের বিপক্ষে কাজ করা প্রত্যেকের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন।
/এসএইচ
Leave a reply