তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য বিমানবন্দরে ভিড় বাড়ছেই। বিদেশিদের পাশাপাশি তাদের সহযোগী আফগানরাও দেশ ছাড়তে মরিয়া।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে তালেবান সম্পর্কে প্রচলিত নেতিবাচক ধারণা ও প্রচারণায় সজোরে আঘাত হানলেন কলকাতার যুবক তমাল ভট্টাচার্য। আফগানিস্তান থেকে ফিরে এসে তালেবানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি।
রোববার (২২ আগস্ট) কাবুল থেকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিমানে দিল্লি পৌঁছান ১৬৮ জন ভারতীয় নাগরিক। তাদের মধ্যে দুই বাঙালি তমাল ভট্টাচার্য ও স্বরজিৎ মুখোপাধ্যায়ও ফিরেছেন আফগানিস্তান থেকে।
ভারতে ফিরেই গণমাধ্যমে তালেবানদের আফগান দখল এবং পরবর্তী পরিস্থিতির বর্ণনা দেন তমাল ভট্টাচার্য। তারই একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তারা তালেবানকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন।
কলকাতায় পা দিয়েই গণমাধ্যমের সামনে তমাল বলেন, আমরা বাইরে থেকে তালেবানের ব্যাপারে যা জানি-শুনি, তা সম্পূর্ণ ভুল মনে হয়েছে। তালেবানরা আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত ভালো আচরণ করেছে। আমাদের উদ্দেশে তারা বলেছে, ‘তোমরা আমাদের মেহমান। তোমাদের নিরাপত্তার সব দায়িত্ব আমাদের।’ তারা আমাদেরকে খাবার দিয়েছে, নিরাপত্তা দিয়েছে।
কাবুলের একটি আন্তর্জাতিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন তমাল ভট্টাচার্য। গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান যখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়, তখন স্বাভাবিকভাবেই তীব্র দুশ্চিন্তা চেপে বসে কলকাতায় থাকা তমালের পরিবারের মধ্যে। একদিকে ভারতীয় অন্যদিকে হিন্দু ছেলে, তাই তালেবান তার ওপর আক্রোশ দেখাবে, এমন ধারণাই ছিল সবার। কিন্তু তমাল ফিরে এসে দিলেন ভিন্ন বক্তব্য।
তমাল বলেন, তালেবানরা কাউকে জ্বালাতন করেনি এবং তারা কোনো মানুষের ক্ষতি করেনি। তালেবানরা প্রথমে এসেই আমাদের বললো স্যার চিন্তা করবেন না আমরা আপনাদের কিছুই করবো না। আপনাদের আমরা হিফাজত করবো।
কলকাতার সন্তান তমাল আরও বলেন, শুধু ভরসা দিয়েই বসে থাকেনি তালেবান, বিদেশিদের মেহমান আখ্যা দিয়ে রাতে পাহারা দিয়েছে। আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা যেসব নারী শিক্ষক ছিলেন, তাদেরকে বিন্দুমাত্র অসম্মান করেননি বরং সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়েছেন।
শিক্ষক তমাল ভট্টাচার্যকে জানান, তালেবান সম্পূর্ণ নতুন একটা দেশ তৈরি করতে চাইছে। কতটা সত্যি জানি না। সময়ই সেটা প্রমাণ করবে।
Leave a reply