সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান এবং হালনাগাদে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। টাকার বিনিময়ে স্বামী থাকতে বিধবা আর সুস্থ মানুষকে প্রতিবন্ধী দেখিয়ে নতুন তালিকায় ভাতা প্রদান করা হলেও কাটা পড়েছে আগের দুই হাজারের বেশি ভাতাভোগীর নাম। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অসহায় মানুষগুলো।
২০২০-২১ অর্থবছরে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলায় বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়ার লক্ষ্যে নতুন আবেদন আর পূর্বের তালিকা হালনাগাদ শুরু করে সমাজসেবা অফিস। কাজিপুর উপজেলায় তিন ক্যাটাগরিতে ২৩ হাজার ৪শ ৫৬টি আবেদন জমা পরে।
যাচাই বাছাই শেষে ১২ হাজার ২৭৪ জন বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীর নাম যুক্ত হয় তালিকায়। অন্যদিকে হালনাগাদের নামে দুই হাজারের বেশি বিধবা আর প্রতিবন্ধীর নাম বাদ দেয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মোবাইল ব্যাংকিং কাজে লাগিয়ে প্রকৃতদের বদলে আর্থিক সুবিধা পাচ্ছে ভুয়া ভাতাভোগীরা।
ভুক্তভোগী একজন জানালেন, ঘুষ দিলে আবার ভাতার কার্ড করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তাকে। অন্যদিকে যারা এবার তালিকায় এসেছেন, তাদের দাবি টাকা দিয়েই তালিকায় নাম উঠিয়েছেন তারা। শর্ত মোতাবেক ভাতার অর্ধেক দিতে হয় সমাজসেবা অফিসে।
নতুন তালিকার একজন ভাতাভোগী বললেন, এক হাজার টাকা দিয়ে বাকিটা রেখে দিয়েছে সমাজসেবা অফিস। আরেকজন জানালেন, পুরানো তালিকাভুক্ত প্রতিবন্ধীদের বাদ দিয়ে জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে ভুয়া এসব নাম তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
স্বামী থাকতে বিধবা আর সুস্থ্য মানুষ কীভাবে প্রতিবন্ধী ভাতা পায়, এমন প্রশ্নের জবাবে সমাজসেবা অফিসের ফিল্ড সুপার ভাইজার শামসুর রহমান রেগে গিয়ে মামলা করার হুমকি দেন।
অন্যদিকে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আলাউদ্দিন হোসেন বললেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের পে-রোল তৈরি হওয়ার আগেই এই তালিকা সংশোধন করে দেয়া হবে।
এই তালিকা নিয়ে বিপাকে জনপ্রতিনিধিরা। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, প্রকৃত ভাতাভোগীরা ভাতা পাচ্ছেন না। উপজেলা চেয়ারম্যান মো: খলিলুর রহমান জানালেন, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের দশাই এক।
তবে বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ হাসান সিদ্দিকী।
Leave a reply