আজানের প্রচলন শুরু যেভাবে

|

প্রতিকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত

আজান হলো ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান। নামাজের জন্য মুসল্লিদের একত্রিত করা বা তাগিদ দেয়া আজানের অন্যতম মাহাত্ম। তবে ইসলাম ধর্মে এই আজানের প্রচলন শুরু হয়েছে কীভাবে জানেন কি? কীভাবে নির্ধারিত হয়েছিল আজানের বাক্যগুলো এবং ইসলামে কে সর্ব প্রথম আজানের ধ্বনি উচ্চারণ করেন?

সর্ব প্রথম কখন এবং কোথায় আজানের সূচনা হয়েছিল তা নিয়ে কিছু মতবাদ আছে। সাধারণত এ নিয়ে চার ধরনের মতবাদের কথা শোনা যায়।
১) সর্বপ্রথম মেরাজের রাতে আজানের সূচনা হয়। মসজিদুল আকসায় জিবরাইল (আ.) আজান ও ইকামত দেন এবং সেখানে রাসুল (সা.) সব নবীকে নিয়ে নামাজ আদায় করেন। (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ১/৩২৮)

২)হিজরতের আগে মক্কায় আজানের সূচনা হয়। (হাশিয়াতু ইবনে আবিদিন : ১/৪১৩)

৩) রাসুল (সা.) মসজিদে নববী নির্মাণের পর প্রথম হিজরিতে মদিনায় আজানের সূচনা হয়। এই মত বেশি প্রসিদ্ধ। (সহিহ ইবনে খুজায়মা : ১/১৯০)

৪) দ্বিতীয় হিজরিতে কিবলা পরিবর্তনের পর আজানের সূচনা হয়। (ফতহুল বারি : ২/৬২)

আবু উমাইর ইবনে আনাস (রা.) তার এক আনসারি চাচা থেকে বর্ণনা করেন, আজানের বাক্য কী হবে এবং কীভাবে মুসলমানদেরকে আজানের জন্য ডাক দেয়া যায় তা নিয়ে প্রথম দিকে বেশ চিন্তায় ছিলেন রাসুল (সা.)। এ সময় সাহাবিরা বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছিলেন। কেউ বলেন, নামাজের সময় পতাকা ওড়ানো হোক। কেউ বলেন, শিঙ্গা-ধ্বনি দেয়া হোক। কারোর আবার পরামর্শ ছিল ঘণ্টা বাজানো হোক। তবে এসবের কোনোটিই রাসুল (সা.) এর পছন্দ হলো না।

ওই দিন সেখানে উপস্থিত সাহাবিদের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ (রা.) নামে একজন সাহাবি ছিলেন। বিষটি মাথায় নিয়ে সেনি তিনি বাড়িতে পৌঁছানোর পর স্বপ্নযোগে আজানের নির্দেশনা পান। পরদিন ভোরে তিনি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বিষয়টি অবহিত করেন। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি কিছুটা তন্দ্রাছন্ন অবস্থায় ছিলাম। এমন সময় এক আগন্তুক এসে আমাকে আজান ও (ইকামত) শিখিয়ে দিলেন।

বর্ণনাকারী বলেন, একইভাবে ওমর (রা.)ও ২০ দিন আগেই স্বপ্নেযোগে আজান শিখেছিলেন। কিন্তু তিনি কারো কাছে তা ব্যক্ত না করে গোপন রেখেছিলেন। পরে ওই বর্ণনাকারী বিষয়টি বলার পর ওমর (রা.) তা স্বীকার করেন এবং আগে না বলার জন্য রাসুল (সা.) এর কাছে ক্ষমা চান।

এরপর রাসুল (সা.) বললেন, বেলাল! ওঠো, এবং আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ তোমাকে যেরূপ নির্দেশ দেয় তুমি তাই করো। অতঃপর বেলাল (রা.) আজান দিলেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৮)


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply