ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহে নানা সংকটে দীর্ঘদিনেও চালু হয়নি সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী আবাসিক স্কুল। এতে সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিবন্ধী শিশুরা। লোকবলের অভাবকেই প্রধান কারণ বলছেন কর্মকর্তারা। আর দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় অযত্নে-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে মুল্যবান যন্ত্রাংশ।
ঝিনাইদহ সদরের সয়াইল গ্রামের বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী কন্যা পপি খাতুনের বাবা পিকুল মোল্লা ও মাতা রেশমী বেগম জানান, আমার মেয়ে জন্মের পরে ইশারায় কথা বলে। সমাজের বোঝা না হয়ে সে যাতে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভবিষ্যতে স্বাবলম্বী হতে পারে এই আশায় প্রায় এক বছর আগে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে মেয়েকে ভর্তির আবেদন দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিষ্ঠান চালু না হওয়ায় আবেদনেই সীমাবদ্ধ সবকিছু।
জানা যায়, এমন অবস্থা অধিকাংশ অভিভাবকেরই।
সরেজমিনে ঝিনাইদহ বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী আবাসিক স্কুলে যেয়ে জানা যায়, এখানে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের গার্মেন্টস এন্ড এ্যাম্ব্রোডারী, ফেন্সী উড ওয়ার্কসহ ৪ টি বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে জেলা শহরের মহিষাকুন্ডু এলাকায় ৩ একর জমির উপর ২০০৫-২০০৬ অর্থ বছরে ৪ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ১০০ আসন বিশিষ্ট বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী আবাসিক স্কুল।
আবাসিক ও একাডেমিক মিলিয়ে রয়েছে ৪ টি ভবন। ২০০৮ সালে নির্মাণ ও প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবার দীর্ঘ সময় পর ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে গণপূর্ত বিভাগ প্রতিষ্ঠানটি হস্তান্তর করে সমাজ সেবা অধিদফতরের নিকট। এরপরও চালু হয়নি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিবন্ধী শিশুরা, অযত্নে নষ্ট হচ্ছে ২০০৭ সালের দিকে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে কেনা কিছু প্রশিক্ষণ যন্ত্রসহ আসবাবপত্র। প্রয়োজনীয় লোকবল, খাবার-থাকার ব্যবস্থা ও ভর্তি কার্যক্রম শুরু না করেই সংগ্রহ করা হচ্ছে আবেদন পত্র। শিক্ষক সহ ৯ টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছে মাত্র ৫ জন। দ্রুত প্রতিষ্ঠানটি চালুর দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, অতি দ্রুত এ বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী স্কুলটি শিশুদের দিকে তাকিয়ে চালু করা দরকার।
প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরত শিক্ষক নাজমুল হক ও প্রধান শিক্ষিকা নাজনীন নাহার জানান, লোকবলের অভাবেই প্রতিষ্ঠানটি চালু করা যাচ্ছেনা।
তবে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মমিনুর রহমান জানান, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত জনবল পেলেই প্রতিষ্ঠানটি চালু হবে, বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী এর সুবিধা পেতে থাকবে।
Leave a reply