সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন প্রথম বর্ষের অন্তত ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার জেরে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি এখন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থীর সহাপাঠীরা। তবে চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই শিক্ষক।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ওই শিক্ষার্থী ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তার সহপাঠীরা জানান। পরে বিষয়টি টের পেয়ে তারা অচেতন অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাতে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে সেখান থেকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার লাঞ্ছিত শিক্ষার্থী ও তাদের সহপাঠীরা পরীক্ষা বর্জন ও বিক্ষোভ করলে ওই শিক্ষক তাদের ভীতি প্রদর্শন করে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা জানান, ওই স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে তাকে ডেকে নিয়ে গালিগালাজ ও বহিষ্কারের হুমকি দেন অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন। আর তার পরই ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তিনি অন্তত ৩০টি ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শুধু চুল কেটে দেয়াই নয়, ওই শিক্ষক বিভিন্ন সময় নানাভাবে শিক্ষার্থীদের চাপে রাখার চেষ্টা করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে অনেকের। চুল কেটে দেয়ার শিকার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জাকারিয়া বলেন, ঘটনার দিন এবং তার পরদিন তিনি পরীক্ষার হলে বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ, ফেল করিয়ে দেয়া ও দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। তার এমন আচরণের ফলে তারা খারাপ পরীক্ষা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ তার।
তবে চুল কেটে দেয়ার ঘটনা সত্য নয় বলে দাবি ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের। যমুনা নিউজকে তিনি বলেন, বিরোধীপক্ষীয় কোনো শিক্ষকের প্ররোচনায়ই তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এমনকি এই ঘটনা তিনি জানতেন না বলেও দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আব্দুল লতিফের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে আত্মহত্যাচেষ্টার খবর ছড়িয়ে পড়লে সোমবার রাতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে ওই শিক্ষককে অপসারণের দাবি করেন। এই দাবিতে তারা একাধিক ভবনে তালা দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে চলমান পরীক্ষাসমূহ তারা বন্ধ করে দিয়েছেন। অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব জানান, দাবি মানা না হলে তারা আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবেন। এ বিষয়ে প্রশাসন বরাবর তাদের স্মরকলিপি দেয়ার কার্যক্রম চলছে।
Leave a reply