স্বপ্নে পাওয়া ফর্মুলায় ঝাড়ফুঁক! রয়েছে চেয়ারম্যানের লাইসেন্সও

|

কয়েক মাস আগেও ছিলেন কৃষক, দিনরাত ক্ষেতে কাজ করে টানতেন সংসারের হাল। শেরপুরের সেই লোকটি হঠাৎই বনে গেছেন কবিরাজ। প্রতিদিন শয়ে শয়ে মানুষকে দিচ্ছেন পানি ও তেলপড়া। স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে নিয়েছেন লাইসেন্সও। কথিত ওই কবিরাজের দাবি, স্বপ্নে পাওয়া কিছু নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি চালাচ্ছেন চিকিৎসা। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ স্পষ্ট করে বলছে, এমন অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে তারা দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

স্বপ্নে পাওয়া নির্দেশনায় ঝাড়ফুঁক দিয়ে চিকিৎসা করা ওই ব্যক্তির নাম ইদু মিয়া। গত তিন মাস ধরে বনে গেছেন কবিরাজ। বাত-ব্যাথা, জন্ডিস, হাপানি থেকে শুরু করে হেন রোগ নেই, যার চিকিৎসা নেই ইদু মিয়ার কাছে। সবার জন্য পথ্য নির্দিষ্ট। হয় তেল, না হয় পানিপড়া। ইদু মিয়ার দাবি, ফর্মুলা তিনি পেয়েছেন স্বপ্নে।

শেরপুর সদরের ভাতশালা ইউনিয়নের কুঠরাকান্দা গ্রামের ইদু মিয়া কয়েকজন সাগরেদও জুটিয়েছেন। যারা গ্রামে গ্রামে তার সুনাম প্রচার করে। তাদের দাবি, চিকিৎসার জন্য কোনো টাকা নেয়া হয় না। তবে কেউ খুশি হয়ে দিলে না করেন না ইদু মিয়া। তবে সমস্যা নিয়ে আসা প্রত্যেককেই তেল ও পানির বোতল বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয় ইদু মিয়ার বাড়ির পাশের এক দোকান থেকে।

ইদু মিয়া জানালেন, কবিরাজির জন্য তিনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়েছেন। কিন্তু আদতেই এমন অনুমতি দেয়ার বিধান আছে কিনা, এমন প্রশ্ন ছিল ভাতশালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুন নাহারের কাছে। তিনি জানালেন, লাইসেন্সটি জাল নয়, তবে সেটি তিনি নিজে দেননি। তাকে না জানিয়েই সার্টিফিকেটটি দেয়া হয়েছে। তিনি জানালেন, কিছু ফর্ম আগে থেকেই সই করা থাকে। এমন একটি ফর্মই সে কোনোভাবে যোগাড় করেছে।

অন্যদিকে জেলা সিভিল সার্জন আবুল কাশেম মোহাম্মদ আনোয়ারুল রৌফ বলছেন, ঝাড়ফুঁক পদ্ধতি অবৈজ্ঞানিক। চিকিৎসা বিজ্ঞান কখনোই তা সমর্থন করে না। এছাড়া এসব অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও কথিত কবিরাজের আস্তানায় আইন-অনুযায়ী অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply