ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকমের সিইও রিপন মিয়ার পর এবার প্রতিষ্ঠানটির আরেক কর্মকর্তা হুয়ামূন কবির নিরব ওরফে আরজে নিরবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে এক দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
আরজে নিরব কিউকমের হেড অব সেলস (কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) অফিসার পদে নিযুক্ত আছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে নিজের পরিচিতিকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষদের আকৃষ্ট করতেন বলে অভিযোগ করেছেন পুলিশ। গত ২৪ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুতে কিউকমের একটি নিউজ শেয়ার করে নিরব লিখেন, পুরো দেশ আর সারা দুনিয়া জুড়ে কিউকম ছড়াতে চাই, ইনশাআল্লাহ।
পুলিশ বলছে, ফেসবুকে তার অনেক অনুসারী থাকায় এমন অনেক স্ট্যাটাস আর নিউজের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন আরজে নিরব। কিউকম নামের প্রতিষ্ঠানটি যে প্রতারণা করেছে তার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন নিরব। তার প্রচারণায় বিশ্বাস করে অনেক মানুষ প্রতিষ্ঠানটিতে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে এখন পথে বসতে চলেছেন।
আরও দেখুন: এবার আরজে নিরব গ্রেফতার
আরজে নিরবকে গ্রেফতারের পর তেজগাঁও বিভাগের এডিসি হাফিজ আল ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, তেজগাঁও থানায় নিরবের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় শুক্রবার ভোররাতে আদাবর থানা এলাকার একটি বাসা থেকে আরজে নিরবকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
এর আগে, পল্টন থানায় দায়ের করা একটি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় কিউকমের সিইও রিপন মিয়াকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তাকে গ্রেফতারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, রিপন মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে- নিজস্ব ব্রান্ডিং করার জন্য তারা ব্যাপকভাবে মোটরসাইকেল বিক্রি করে। বিভিন্ন অফারের মাধ্যমে কিউকম লোভনীয় দামে মোটরসাইকেল বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছিল। বাজারে যে মোটরসাইকেলের দাম ১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, সেটি তারা ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দিত। বিপুল সংখ্যক ক্রেতা অর্ডার করে মোটরসাইকেল না পেয়ে হতাশায় ভোগে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক জুন মাস থেকে এস্ক্রো সিস্টেম চালু করে। এর অধীনে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পেমেন্ট গেটওয়ে সিস্টেম চালু করা হয়। তৃৃতীয় পক্ষ হিসেবে ফোস্টার নামে একটি কোম্পানিকে এ দায়িত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহকের পেমেন্টটি ফোস্টারের কাছে থাকবে। পণ্য ডেলিভারির পর পেমেন্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠাবে ফোস্টার। কিউকমের পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে চেক প্রদানের বিষয়টি ফোস্টারের নজরে আসে। পরে ফোস্টার কিউকমের সব পেমেন্ট আটকে দেয়। ফোস্টার এখন পর্যন্ত কিউকমের ৩৯৭ কোটি টাকা মোটরসাইকেলের পেমেন্ট আটকে দিয়েছে বলে রিপন মিয়া ডিবি পুলিশকে বলেছেন। এর বাইরে গ্রাহকদের পণ্য ডেলিভারির আরও ২৫০ কোটি টাকা রিপন মিয়া হাতিয়ে নিয়েছেন বলে উল্লেখ করে ডিবি কর্মকর্তা হাফিজ আক্তার।
Leave a reply