বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় সংশ্লিষ্ট নানান প্রদর্শনী ও উপকরণ থাকার কথা থাকলেও সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। মেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কোনো ছিটেফোঁটাও নেই। তবে উপকরণ হিসেবে দেখা গেছে ভেড়ার পালকে।
বুধবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে চৌহালী উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, রঙিন কাপড়ে ঘেরা ছোট ছোট কক্ষের ভেতরে টেবিল, উপরে ঝুলছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা ২০১৮ লেখাসংবলিত দৃষ্টিনন্দন ব্যানার। কিন্তু স্টলের ভেতরে কিংবা বাইরে আয়োজক কমিটি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অথবা দর্শনার্থী কাউকেই দেখা যায়নি। তবে গবাদিপশু ভেড়ার পালকে স্টলের ভেতরে ও বাইরে বিচরণ করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলেও টনক নড়েনি আয়োজকদের।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তোলা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী করতে ৩৯তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে চৌহালী উপজেলা চত্বরে মঙ্গলবার সকালে দুই দিনব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মেলা স্টলের টেবিলের ওপরে বিজ্ঞানবিষয়ক কোনো উপকরণ দেখা না গেলেও একজনকে শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। অন্য স্টলগুলোতে কিছু শিক্ষার্থীকে মোবাইলে গান শুনতে দেখা যায়।
বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ভারপ্রাপ্ত) জানালে তিনি এমনটি হওয়ার কথা নয় বলে জানান, আমি একটি মিটিংয়ে আছি। পরে কথা বলি। আর এখনই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠাচ্ছি।
এ বিষয়ে শহীদ শাহজাহান কবীর আরপিএন উচ্চ বিদ্যালয় ও এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং কয়েকজন শিক্ষার্থী আক্ষেপ করে বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমরা পিছিয়ে রয়ে গেলাম। সারা দেশে যখন ঘটা করে আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানে চৌহালীতে কেন ফটোসেশন করে নামকাওয়াস্তে স্টল সাজিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হলো? আমাদের মেধার বিকাশে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। মেলায় বিজ্ঞানচর্চা ও প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে কোনো আলোচনা কিংবা প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকলে আমরা চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও এগিয়ে যেতে উৎসাহ পেতাম।
এদিকে মেলার দ্বিতীয় দিন বুধবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে স্টলগুলোতে কোনো শিক্ষার্থী কিংবা অন্য কারও দেখা না মিললেও একদল ভেড়াকে দেখা গেছে। টেবিলের ওপরে-নিচে লাফালাফি করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আনিছুর রহমান বলেন, মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় দুদিন উল্লেখ থাকলেও একদিনেই অঘোষিত শেষ হয়েছে।
এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সমস্যা ও শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের কারণে কোনো শিক্ষক আসতে পারেননি।
তবে এ বিষয়ে জানতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেম ওবায়েদের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
Leave a reply