যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে আফগানিস্তানে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা দিতে পারে বলে শনিবার সতর্ক করেছেন পাকিস্তান ও সুইডেনের দুই মন্ত্রী। খবর রয়টার্সের।
আগস্টে পশ্চিমা-সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় আসে অতিরক্ষণশীল গোষ্ঠী তালেবান। মূলত এরপরই একে একে উন্নত দেশগুলো অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দেয় দেশটিতে। অথচ দেশটির অর্থনীতি শুরু থেকেই অনেকাংশে ত্রাণনির্ভর।
দুবাইতে সুইডিশ উন্নয়নমন্ত্রী পার ওলসন ফ্রিদ বলেন, পতনের দ্বারপ্রান্তে আফগানিস্তান এবং এই পতন আমাদের ধারণার চেয়েও দ্রুত ধেয়ে আসছে।
তার আশঙ্কা, আফগানিস্তানের অর্থনীতির এই আকস্মিক ক্রমাবনতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ করে দিতে পারে।
তাই বলে আফগানিস্তান সরকারকে অর্থ সহায়তার দেয়ার কথাও সুইডেন সরকার ভাবছে না। ওলসন ফ্রিদ বলেন, সরকারের হাত দিয়ে নয়, আফগানিস্তানে আমরা মানবিক সহায়তা দেবো দেশটির বিভিন্ন নাগরিক বা সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে।
এদিকে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী রয়টার্সকে বলেন, তালেবানের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনই আফগানিস্তানের মানবিক বিপর্যয় ঠেকানোর একমাত্র উপায়। সেটি হলেই কেবল সেখানে মানবাধিকার সুরক্ষা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক, সাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠায় উৎসাহিত করা যাবে।
বিভিন্ন দেশ কর্তৃক আটকে রাখা আফগানিস্তানের প্রাপ্য টাকা ছেড়ে দেয়ার আহ্বানও জানান তিনি। তার প্রশ্ন, আমরা কি আফগানিস্তানকে বিশৃঙ্খলায় ঠেলে দিতে যাচ্ছি, নাকি দেশটিকে স্থিতিশীল বা তা করার চেষ্টা করতে যাচ্ছি?
তালেবানদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে সেখানে মানবাধিকার সুরক্ষা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক, সাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠায় উৎসাহিত করা যাবে, বলেছেন তিনি।
পাকিস্তান সরকারের ঘনিষ্ঠতা নতুন কোনো খবর নয়। এমনকি প্রায় দুই দশক ধরে কাবুলের যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে কট্টরপন্থি গোষ্ঠীটির লড়াইয়েও ইসলামাবাদ সহায়তা করেছে বলে সমালোচকদের অভিযোগ। যদিও সে অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান।
ফ্রিদ বলছেন, তালেবান এখন পর্যন্ত প্রমাণ দিতে পারেনি যে তারা তাদের ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের নিপীড়নমূলক নীতিগুলো থেকে বেরিয়ে এসেছে।
ইউরোপীয় দেশগুলোর জন্য কাবুলে ফের দূতাবাস খোলার পরিস্থিতি এখনও হয়নি বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। কাবুলের বদলে কাতারেই আফগানিস্তানকেন্দ্রিক কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়বে বলেও অনুমান তার।
পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তালেবানের কথা চালাচালির গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে কাতার। কয়েকদিন আগেই ফ্রিদ দোহায় কাতারে কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন।
পাকিস্তানের মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলছেন, আফগানিস্তানের নতুন শাসকদেরকে স্বীকৃতি এবং নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যসহ তালেবান সদস্যদের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও অন্যান্য বিশ্বশক্তির একটি ‘ফ্রেমওয়ার্ক’ ঠিক করার এখনই সময়।
আফগানিস্তান প্রসঙ্গে তার সাফ হুঁশিয়ারি, (টাইম) বোমার ঘড়ি কিন্তু এরই মধ্যে চলতে শুরু করেছে!
Leave a reply