সাকিবের গতকালের আচরণ ছিল ‘অখেলোয়াড়সুলভ’। নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন তা, এবং বলেছেন তার এত উত্তেজিত হওয়া ঠিক হয়নি। আবার এও বলেছেন, ভবিষ্যতে আরও সচেতন থাকবেন তিনি।
এদিকে ভুল স্বীকার করে নেয়ায় আইসিসি তার বিরুদ্ধে সম্ভবত কড়া পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকতে পারে। নিষেধাজ্ঞার মুখে না পড়ার সম্ভবনাই বেশি। শুধু জরিমানা হতে পারে বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের।
তবে আইসিসি নমনীয় হলে কী হবে, ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকরা সাকিব-মাহমুদুল্লাহদের ধুয়ে দিচ্ছেন টুইটারে! অনেকে এ দাবিও জানাচ্ছেন যেন, বাংলাদেশ দলকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করা হয়। একটি-দুটি নয়, এমন শত শত টুইট-রিটুইট হচ্ছে গত রাত থেকে। এরকম কয়েকটি টুইটের স্ক্রিনশট–
খেলার মাঠে ‘অখেলোয়াড়সুলভ’ বা খারাপ আরচরণ নতুন কিছু নয়। সব দেশের ক্রিকেটাররা কমবেশি এমনটি করে থাকেন। আর বিশেষ করে টি-২০’র মতো উত্তেজনাকর ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তে মেজাজ হারিয়ে ফেলা অসম্ভব কিছু না। গতকাল সাকিবের বেলায়ও তেমনটি হয়েছে। যেখানে এক বলে বা এক রানে ফাইনাল খেলতে পারা-না পারার বিষয়টি নির্ধারিত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে- সেখানে আম্পায়ার কর্তৃক একটি ‘নো’ বল না ডাকাতে অনেক কিছু যায়-আসে। সাকিব এমন সময়ে মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি।
কিন্তু এর চেয়ে অনেক স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও মেজাজ হারিয়ে মাঠে খারাপ আচরণের রেকর্ড আছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের! তেমনই কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হল-
বিরাট কোহলি:
ক্রিকেট মাঠে কুকীর্তির অভাব নেই বিরাট কোহলির। প্রতিপক্ষকে অসম্মান করা বা দর্শকদের ব্যাঙ্গ করতে বেশ পারদর্শী ভারতীয় দলের অধিনায়ক। বহুবার প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। এমনকি বাদ যায়নি বলবয়ও। গত বছরের জুলাই মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্টে ফিল্ডিং করার সময় বল ধরতে না পেরে বলবয়ের হাতেই লাথি বসাতে যান তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত বলবয় নিজের শরীর সরিয়ে নিলে লাথিটি লাগেনি।
এ বছর জানুয়ারি মাসে সেঞ্চুরিয়নে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে আম্পায়ার মাইকেল গগের সাথে মাঠে খারাপ আচরণ জন্য কোহলিকে জরিমানা করেছিল আইসিসি। মাঠের আউটফিল্ডের করুণ অবস্থার কারণে বারবার বল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নিয়ে আম্পায়ারের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ভারতীয় অধিনায়ক। কিন্তু মাইকেল গগ সেটির দিকে নজর না দেয়ায় কোহলি জোরে মাটিতে বল ছুঁড়ে মারেন।
২০১১ সালে গ্যালারিভর্তি দর্শকদেরকে অশ্লীল ভঙ্গিতে ‘মধ্যমা’ দেখিয়েছিলেন। যদিও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণের কারণে তিনি এমনটি করেছিলেন। কিন্তু একজন পেশাদার খেলোয়াড় হয়ে এমন আচরণ মোটেই কাম্য নয়। এ ঘটনার পর তাকে সুনীল গাভাস্কার ও শেন ওয়ার্নের মতো তারকাদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল।
গৌতম গম্ভীর:
ক্রিকেট মাঠে সতীর্থ খেলোয়াড়ের সঙ্গে মারামারি করে শাস্তি পেয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট তারকা গৌতম গম্ভীর। ২০১৫ সালে আইপিএলে দিল্লি বনাম বাংলার রঞ্জি ম্যাচ চলাকালীন এক সময় মারামারি বেধে যায় দুই অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর এবং মনোজ তাওয়ারির মধ্যে। এজন্য শাস্তি পেতে হয়েছে উভয়কেই। এছাড়া আইপিএলের একাধিক ম্যাচে ধোনি-কোহলিদের সাথেও খারাপ আচরণ করে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ান অলারাউন্ডার শেন ওয়াটসনকে ২০০৮ সালে দিল্লি টেস্ট গালাগালি করেন গম্ভীর। এছাড়া পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে শহীদ আফ্রিদি, কামরান আকমলসহ অনেকের দিকে মাঠে তেড়ে আসার ঘটনাও আছে।
শ্রীশান্ত/হরভজন সিং:
ভারতীয় পেস বোলার একাধিকবার মাঠে খারাপ আচরণের জন্য আইসিসির শাস্তির মুখে পড়েন। আইপিএলের এক ম্যাচে হরভজন সিংহের সাথে মারামারির ঘটনা ছিলো সবচেয়ে আলোচিত হয়েছিল। এই দুই ভারতীয় ক্রিকেটার একে অন্যকে চড় মেরেছিলেন মাঠেই!
Leave a reply