মিয়ানমার জুড়ে জোরদার হয়েছে জান্তা বিরোধী আন্দোলন। দেশটির ইয়াঙ্গুন, সেগিং, মান্দালয়, মাগউই, ইরাবতিসহ বিভিন্ন শহর ও রাজ্যে জান্তাসেনাদের সাথে তুমুল লড়াই হয়েছে জান্তা বিরোধীদের। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, গত কয়েক দিনের সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ৫০ এরও বেশি সেনাসদস্য। হতাহত হয়েছেন অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক।
গতকাল সোমবার (২৫ অক্টোবর) স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মায়ং শহরের কিয়াউকিত পুলিশ স্টেশনে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অভিযানে নিহত হয়েছে অন্তত পাঁচ জান্তা সেনা। মায়ং শহরে গত শনিবার (২৪ অক্টোবর) প্রতিরোধ যোদ্ধাদের পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত হয় জান্তা সেনাদের দুটি সাজোয়াযান, এতে নিহত হয়েছে অন্তত ১৫ জান্তা সেনা।
এছাড়া পেকোন শহরের প্রবেশমুখে পিডিএফএস ও সিএনডিএফ যোদ্ধারা জান্তা সেনাবহরে যৌথ অভিযান চালালে পাঁচটি সাজোয়াযান ক্ষতিগ্রস্থ ও অন্তত ১০ জান্তাসেনা নিহত হয় বলে জানা গেছে। এ হামলার জবাবে দশটিরও বেশি কামানের গোলা ছোঁড়ে জান্তা সেনারা। যার কয়েকটি পার্শ্ববর্তী বেসামরিক এলাকায় গিয়ে আঘাত হানলে নিহত হন এক নারী, আহত হন শিশুসহ অন্তত পাঁচজন বেসামরিক নাগরিক। দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলার পর শহরটি ছেড়ে পালিয়েছে হাজারো মানুষ।
এর আগে, রোববার বিকেলে কাংইদায়ুন্ত শহরে ইয়াঙ্গুন–পাথেইন সড়কে জান্তাসেনা বহরে চালানো বোমা হামলায় তিন জান্তা সেনা নিহত হয়েছে। এ সময় আহত এক প্রতিরোধযোদ্ধাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে জান্তা সেনারা। এর আগেরদিন শনিবার দিনজুড়ে একাধিক হামলায় ইয়াঙ্গুনেই নিহত হয়েছে পাঁচজনের বেশি জান্তা সেনা।
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। আটক করা হয় অং সান সু’চিসহ বেসামরিক সরকারের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে। এরপর সেনাশাসনের প্রতিবাদ এবং সু চিসহ রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে রাজপথে নামে দেশটির মানুষ, তাদের সাথে যুক্ত হয় দেশটির সেনাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও। সেনা অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভ ও প্রতিরোধযুদ্ধে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে নিহত হয়েছেন ১১০০ এরও বেশি বেসামরিক মানুষ। এছাড়াও গ্রেফতার হয়েছেন আট হাজারের বেশি মানুষ।
/এসএইচ
Leave a reply