পাকিস্তান ও ফাইনালের মাঝে এখন কেবল অস্ট্রেলিয়া

|

ছবি: সংগৃহীত

ধারাবাহিক ও ভারসাম্যপূর্ণ পাকিস্তানের সাথে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের মাঝে এখন দাঁড়িয়ে আছে কেবল অস্ট্রেলিয়া। বৈশ্বিক আসরে অজিদের ঐতিহাসিক দক্ষতার কারণেই হয়তো পাকিস্তানের সামনে আজ বড় নামের বাধা। নইলে এ আসরে যেমন ক্রিকেট খেলছে দুই দল, তাতে চোখ বুজেই আজকের ম্যাচে ফেভারিটের তকমা দিয়ে দেয়া যায় পাকিস্তানকে। তার উপর, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০১৫ সালের পর থেকে কোনো ম্যাচ হারেনি পাকিস্তান।

পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া এর আগে মুখোমুখি হয়েছিল ২০১০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। সেই ম্যাচে প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই পাকিস্তান ছিল চালকের আসনে। কিন্তু মাইক হাসি হঠাৎ করেই দানব হয়ে উঠলে মুহূর্তেই পাল্টে যায় সকল হিসেব। আর সাইদ আজমলের করা শেষ ওভারের ৫ বলেই ২২ রান তুলে অবিশ্বাস্য এক জয় ছিনিয়ে নেয় অস্ট্রেলিয়া। গতকাল প্রথম সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের দুর্দান্ত জয় দেখে কিছুটা অনুপ্রাণিত হতে পারে অ্যারন ফিঞ্চের দল। এমন কিছু ঘটালে না পারলে আজ পাকিস্তানকে টপকে ফাইনালে কিউইদের মোকাবিলা করার সুযোগ তারা পাবে, এমন সম্ভাবনা ক্রিকেটীয় সমীকরণ থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষীণই মনে হচ্ছে।

ছবি: সংগৃহীত

অ্যারন ফিঞ্চ অবশ্য বলেছেন, দল হিসেবে তারা যথেষ্ট অনুপ্রাণিত। কারণ এই টুর্নামেন্টের শুরুতে তেমন কোনো ক্রিকেট বোদ্ধাই অজিদের রাখেনি সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্টের তালিকায়। তবে শেষ পর্যন্ত সেরা চারে উঠে এসেছে তারা। মিডল অর্ডারে স্টিভেন স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মার্কাস স্টয়নিসদের ব্যর্থতাও ঢেকে আছে বাকিদের সাফল্যে। পাকিস্তানের বাবর-রিজওয়ানের মতো অস্ট্রেলিয়ার প্রধান চালিকাশক্তিও তাদের ওপেনিং জুটি; ফিঞ্চ-ওয়ার্নারের ব্যাট হাসছে বলেই সেরা চারে উঠে এসেছে তারা। তবে পাকিস্তানের মিডল অর্ডার যেমন জ্বলে উঠেছে প্রয়োজনের মুহূর্তে, সেখানেই যেন কিছুটা পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং। নামের জোরে অজিরা এগিয়ে থাকলেও, ফর্মের বিচারে পাকিস্তানের মিডল অর্ডারে বসন্ত বইয়ে দিচ্ছেন যেন হাফিজ-শোয়েব মালিক- আসিফ আলিরা।

ছবি: সংগৃহীত

অন্যদিকে, টুর্নামেন্টের শুরুতে যেসব শঙ্কা নিয়ে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া, তার অনেককিছুই উড়িয়ে দিয়েছে তারা ইতোমধ্যে। ওয়ার্নার-ফিঞ্চ দেখিয়েছেন, লোয়ার অর্ডারের খুব বেশি কিছু করার দরকারই নেই। মিচেল মার্শও আছেন দারুণ ফর্মে। স্টার্ক-হ্যাজলউডরাও প্রমাণ দিয়েছেন, কেবল এক রেসকোর্সে দৌড়ানোর ঘোড়া নন তারা। আর অ্যাডাম জাম্পা তো এই আসরেরই অন্যতম সেরা পারফর্মার।

অন্যদিকে, পাকিস্তানকে দেখাচ্ছে সম্পূর্ণ অপ্রতিরোধ্য এক দল। যাদের সর্বশেষ ৫ ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন ভিন্ন ৫ খেলোয়াড়। ব্যাটিংয়ে বাবর-রিজওয়ানের পর ফখর জামান ছাড়া সবাই আছেন দারুণ ফর্মে। আসিফ আলি তো দুনিয়াকেই নিজের ফিনিশার পরিচয়ের সার্থকতা জানান দিলেন এই আসরে। মালিক-হাফিজরা কাটাচ্ছেন তাদের খেলোয়াড়ী জীবনের বিলম্বিত বসন্ত। আর শাহিন আফ্রিদি-হারিস রউফরা প্রতিপক্ষের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে আছেন সেই ভারতের বিপক্ষে প্রথম থেকেই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কেবল নিজেদের ফর্ম অনুযায়ী খেলতে পারলে তাদের ফাইনালের যাওয়ার ব্যাপারে আর কোনো সমস্যা হবার কথা না। দেখা যাক, দ্বিতীয় সেমিফাইনাল প্রথমটিকে ছাপিয়ে যেতে পারে কিনা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply